বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই, ২০২৪, ১০:৪৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কোটা আন্দোলনে নিহত টিটুর মৃত্যুতে বিলাপ করছে পরিবার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

এই ছিলো আমার ভাগ্যে ! আমি আর এ্যাহন বেঁচে থেকে কি লাভ বলে বিলাপ করছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকার ধানমন্ডিতে গুলিতে নিহত প্রাইভেটকার চালক টিটু হাওলাদারের (৩৫) বৃদ্ধ বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার।

টিটু হাওলাদার বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। নিহত টিটু ও আয়েশা দম্পতির বড় মেয়ে তানজিলার বয়স ১০ বছর, ছেলে সাইমুন সাত বছর ও ছোট মেয়ে তামান্নার বয়স চার মাস। টিটু হাওলাদার ঢাকার ধানমন্ডির গ্রিন লাইফ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের অধীনে প্রাইভেটকার চালাতেন।

বাবাকে হারানো শিশুদের কান্না দেখে আশে-পাশের মানুষগুলোও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। সন্তান হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার। স্ত্রী আয়েশা বেগম তিন শিশু সন্তান নিয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন।

বড় মেয়ে তানজিলা বাড়ির কাছেই আনোর জলিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে ও ছেলে সাইমুন স্থানীয় বয়াতি বাড়ি কওমি মাদরাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানকে বাড়িতে রেখে টিটু হাওলাদার একা কর্মস্থলে থাকতেন।

টিটু হাওলাদারের রিকশাচালক বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। আর টিটুর চার ভাই বোনের মধ্যে মো. ইমরান হোসেনও রিকশা চালিয়ে চলে। বলতে গেলে এখন মানুষের দানে চলে টিটুর পরিবারের জীবিকা। বিবাহিত বড় বোন রুমেনা বেগম (৩৫) থাকেন স্বামীর সংসারে আর ছোট বোন ফাতিমা আক্তার (১৮) প্রতিবন্ধী হওয়ায় বসবাস করেন একই সংসারে।

টিটু হাওলাদারের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, টিটু গত ১১ জুলাই বাড়ি থেকে কর্মস্থল ঢাকায় যান। এর মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে ফোন করে তাদের এক নিকট আত্মীয় জানান, তোমার স্বামীর গায়ে গুলি লেগেছে। বিনা অপরাধে তাকে জীবন দিতে হলো। আমি অবুঝ সন্তানদের কী বুঝ দেব? গত রোববার (২১ জুলাই) রাতে টিটু হাওলাদারের ফুফাতো ভাই মো: রাকিব লাশ নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে আসেন। ঐ দিন রাতেই জানাজা শেষে স্থানীয়ভাবে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

 

মন্তব্য করুন