প্রকাশিত: ২৬ জুলাই, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

পঞ্চগড়ে জনবহুল এলাকায় এলপিজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি


মোঃএনামুল হক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ


অবৈধভাবে জনবহুল ঘনবসতিপুর্ণ এবং জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন পঞ্চগড় সদরের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন পঞ্চগড়ে বেঙ্গল এলপিজি নামে নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশন স্থাপন কাজ বন্ধকরণসহ প্রাথমিক অনুমোদন বাতিলকরণসহ যত্রতত্র এলপিজি ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন না দেওয়ার দাবিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলা শাখা জ্বালানি উপদেষ্টা, বিস্ফোরক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রংপুর শহরের সিও বাজার এলাকায় এলপিজি ফিলিং স্টেশনের স্টোরেজ ট্যাংক বিস্ফোরণে একজন নিহত হওয়ায় এবং বিস্ফোরণের আশেপাশের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঘরবাড়ির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি, যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি এবং ময়মনসিংহ শহরে এলপিজি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পঞ্চগড় শহরের সুশীল সমাজ, সচেতন নাগরিক সমাজ এবং পুরাতন পঞ্চগড় রেজিষ্ট্রি অফিস সংলগ্ন এলাকার মানুষ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনকে (বাপা) “পঞ্চগড় শহরের জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের সম্মুখে নির্মাণাধীন বেঙ্গল এলপিজি” এর নির্মাণ কাজ বন্ধকরণসহ উক্ত স্থানে এলপিজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণের অনুমোদন বাতিলের দাবী উপস্থাপনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবহিত করে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অনুসন্ধানে করে জানতে পারেন যে, প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ঢাকা কর্তৃক তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (অটোগ্যাস) রিফুয়েলিং ও রুপান্তর ওয়ার্কসপ স্থাপন পরিচালনায় এবং রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা/২০১৬ এর বিধান লংঘন করিয়া নকশা অনুমোদন দিয়েছেন। কারণ তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিধিমালা/২০০৪ অনুযায়ী জনবসতিপূর্ণ এলাকা, বানিজ্যিক এলাকা এবং সরকারি অফিস সংলগ্ন স্থানে এলপিজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন স্থাপনযোগ্য নহে। প্রস্তাবিত এলপিজি স্টেশনের তিনদিকে সংলগ্ন বসতবাড়ি রয়েছে, সম্মুখে ৭৫ গজের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা রেজিস্ট্রি অফিস এবং যাতে বিগত কয়েক শতকের মুল্যবান দলিল পত্রের মুল বালাম বহির রেকর্ড রুম রয়েছে। স্থাপনযোগ্য এলপিজি ফিলিং স্টেশনের ৭ মিটার এলাকায় কোন বসতবাড়ি থাকলে সেখানে এলপিজি বিধিমালা/২০০৪ এর বিধান অনুযায়ী নকশা অনুমোদনযোগ্য নহে। দৃশ্যমান একটি জনবসতিপুর্ণ এলাকায় বেঙ্গল এলপিজির নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এবং রংপুরের দূর্ঘটনার কারণে এলাকাবাসী আতঙ্কিত। সাবধানতা অবলম্বনে দূর্ঘটনা এড়ানো বা কমানো যেতে পারে কিন্তু বন্ধ করা যাবে না।
যখন কোন দূর্ঘটনা ঘটে তারপর আমরা কারণ অনুসন্ধান শুরু করি। অনুমোদন দাতাদের দায়ী করি, বিচার দাবি করি, কিন্তু দূর্ঘটনার আগে সামাজিক সংগঠনের দাবির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এলপিজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার আগে পৌরসভা, জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র প্রয়োজন। পঞ্চগড় জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন বেংগল এলপিজির নকশা অনুমোদনের পূর্বে কিভাবে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহ ঘনবসতি শহরের ব্যস্ততম এলাকায় এই সকল ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে তার প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে এই সকল ছাড়পত্র দেওয়া হয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তা অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। এখানে উল্লেখ্য যে, নির্মাণাধীন বেঙ্গল এলপিজির বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন আপত্তি করলে প্রভাবশালী মহলের হুমকির মুখে পড়তে হয়। ফলে এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলে না। এছাড়াও পঞ্চগড় জেলায় অধিকাংশ এলপিজি ফিলিং স্টেশনের ২০০৬ সালের নীতিমালা ৬ (৩) ধারায় চুড়ান্ত অনুমতির পূর্বে এলপিজির বিক্রয় না থাকায়, তাদের এলপিজি বিক্রয় করা বে-আইনী।
এমতাবস্থায় বাপা, পঞ্চগড় জেলা শাখা পঞ্চগড় শহরের জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সম্মুখে নির্মাণাধীন বেঙ্গল এলপিজি এর নকশা অনুমোদন বাতিলকরণ সহ পঞ্চগড় জেলার সকল এলপিজি ফিলিং স্টেশন সমুহের এলপিজি বিক্রয়ের অনুমোদন না থাকলে তা বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাপা পঞ্চগড় শাখা ভুক্তভোগী জনসাধারণের স্বার্থে যে কোন ধরনের আইন সংগত প্রক্রিয়ার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে সম্মত রয়েছে।
অদ‍্য পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলীর অফিস কক্ষে গিয়ে স্মারকলিপি তুলে দেন। এ সময় বাপার কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট এম কে মিলন, সদস্য জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যম কর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

মন্তব্য করুন