সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

মেয়রকে প্রধান আসামি করে মামলা

বিশ্বনাথে মেয়রে গাড়ি চাপায় নারী কাউন্সিলরকে হত্যা চেষ্টা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগমসহ ৭ কাউন্সিলর। অন্যদিকে তাদের ধমাতে ও শায়েস্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছিলেন মেয়র। নানান উপায়ে চেষ্টাও চালাচ্ছিলেন।
কিন্তু তাদের ধমানো যায়নি। উল্টো তারা মেয়রের উপর অনাস্থা জানিয়ে রেজুলেশন পাশ করে তা পাঠিয়ে দিয়েছেন সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। তারপর থেকে নড়বড়ে মেয়রের চেয়ার। এ নিয়ে বেজায় খেঁপেছেন মুহিবুর রহমান। এরই সূত্র ধরে
মঙ্গলবার নিজের পরিষদের মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগমকে গাড়ি ছাপায় হত্যার চেষ্টা করেছেন বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। এমন অভিযোগ করেছেন রাসনা বেগমসহ পরিষদের কাউন্সিলররা। ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন
রাসনা। থানায় দাখিল করেছেন অভিযোগ। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিশ্বনাথ পৌরশহরে মেয়রের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করা হয়।

একাধিক কাউন্সিলর ও রাসনা বেগম জানান, সম্প্রতি মেয়র মুহিবুর রহমানের দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে পৌরসভার দুই প্যানেল মেয়রসহ ৭জন কাউন্সিলর একত্রিত হয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে অনাস্থা প্রস্তাব দেন। এরই জের ধরে ৭জন কাউন্সিলরদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় মেয়র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খারাপ মন্তব্য করে আসছিলেন। মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার দক্ষিণ মীরেরচর কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে মেয়র ও কাউন্সিলর বারাম আলী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য
করছিলেন। সে সময় সেখানে রাসনা বেগম ও অন্যান্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এতে বাঁধা দিলে মেয়র তার মাথার চুল ধরে টানাহেচড়া শ্লীলতাহানী ও মারধর করেন। মেয়রের নির্দেশে গাড়ির চালক তার গাড়ি দিয়ে কাউন্সিলর রাসনা বেগমকে গাড়ি
চাপা দিয়ে প্রাণে হত্যার চেষ্ঠা করেন। এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

বিকেলে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে রাসনা বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে প্রধান অভিযুক্ত করা হয় মেয়র মুহিবুর রহমানকে। এছাড়াও দুই কাউন্সিলর ফজর আলী’কে দ্বিতীয় এবং কাউন্সিলর বারাম উদ্দিনকে তৃতীয় আসামি করা হয়। মামলায় বাকি ৭জন আসমিরা হচ্ছেন- জানাইয়া গ্রামের আজেফর আলীর ছেলে জমির আলী (৪০), পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও পৌরসভার উদ্যোক্তা সুরমান আলী (৪০), শরিষপুর গ্রামের সোনাফর আলীর ছেলে আমির আলী (৪৫), দক্ষিণ মীরেরচর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মিতাব আলী (৪০), রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত তবারক আলীর ছেলে আনোয়ার আলী (৪৪), রহমাননগর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে মেয়রের গাড়ি চালক হেলাল মিয়া (৪৫) ও জানাইয়া গ্রামের মৃত তুতা মিয়ার ছেলে আব্দুস শহিদ (৪৮)। অভিযোগ অজ্ঞাতনামা আসামি রাখা হয়েছে আরও ৪/৫জন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র মুহিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। থানার অফিসার ইনচার্জ রমাপ্রসাদ চক্রবর্তি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন