
প্রকাশিত: ৯ মে, ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বর্তমান সময়ে কাজের চাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্ট্রেস এবং কমছে ঘুমের সময়। কেউ কেউ তো দিনে ৫ ঘণ্টাও ঘুমান না। আর এটার কতটা খারাপ প্রভাব আপনার স্বাস্থ্যের উপর পড়তে পারে সেটা আপনার ধারণাও নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে সেটার খারাপ প্রভাব স্বাস্থ্যকে এফেক্ট করে। হতে পারে একাধিক রোগ-ব্যাধি। কখনো এমনও দেখা যায় ব্যস্ততার চাপে কোনো কাজই সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। কোনো কাজ শুরু হলেও তা সুষ্ঠুভাবে শেষ করা যাচ্ছে না। আবার, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মতো সময়ও নেই।
অফিসের কাজ সামাল দিতে না দিতেই বাড়ির কাজ সারার কথা মনে হয়। বাড়ির কাজ শেষ করে বিছানায় পিঠ ঠেকাতে গিয়ে আবার পরের দিনের পরিকল্পনা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। নিজের কথা ভাবার এতটুকুন সময় নেই! একটা ছুটির দিন সাধারণত বিশ্রাম নেওয়ার কথা। কিন্তু চুপ করে বসে থাকতে গেলেও, মন খচখচ করতে থাকে। নির্দিষ্ট কোনও একটি কাজ করতে গেলেই মনে হয় অন্যটি করলে ভাল হতো। কত কিছু করার ছিল, হলো না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যস্ত থাকা ভালো। তবে, মাথায় সারাক্ষণ কাজের চিন্তা ঘুরতে থাকা আসলে ‘টাইম ফ্যামিন।
সঠিক সময় ও নিয়ম মতো ঘুমানোর জন্য আগে ঘুম না হওয়ার কারণগুলো জানতে হবে, যেমন-
শারীরিক কারণ
১. রক্ত শূন্যতা- খাদ্যাভ্যাস অর্থাৎ খাদ্য তালিকায় লৌহজাতীয় খাবার না থাকা, অথবা রক্ত কমে যাওয়া সেটা ঋতুস্রাব কিংবা দেহের অভ্যন্তরে কোনো প্রকার আলসার থেকেও হতে পারে।
২. হজমের সমস্যা থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেহে শোষিত না হওয়া, ‘ইনফ্লামাটরি বাওয়েল ডিজিজ’।
৩. থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, কর্টিসল হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণ ইত্যাদি অন্তঃস্রাবী সমস্যা।
৪. রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন দেহের সুস্থ কোষকেই শত্রু ভেবে আক্রমণ করে।)
৫. গর্ভাবস্থায় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যেমন- ডিপ্রেশন কমানোর ওষুধ, পেশি শিথিলের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের জন্য খাওয়া ট্যাবলেট ইত্যাদি।
৬. হৃদরোগ, ফুসফুসের সমস্যা (যেমন ফুসফুস থেকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সারা শরীরে ঠিক মতো সরবরাহ না হওয়া)।
৭. বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ যেমন- দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস, কোভিড-১৯, ফ্লু ও অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগ।
৮. স্থূলতা ও দীর্ঘস্থায়ী কোনো প্রদাহ।
প্রতিকূল পরিবেশ, শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সমাধান এবং যথাযথ ঘুমের জন্য নিচের পন্থাগুলো অবলম্বন করতে পারেন-
১) কাজের ধরন বুঝে সময় ভাগ করে নিন:
শুধু ঘুমের সময়টুকু বাদ দিলে সারাক্ষণই কোনো না কোনো কাজ করেই চলেছেন। নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। শুনতে ভাল লাগলেও মস্তিষ্কের জন্য এই অভ্যাস ভাল নয়। মনোরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, একঘেয়ে কাজ করতে কারও ভালো লাগে না। কাজের মাঝে-মাঝে তাই বিরতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাতে যেমন শরীরের ভালো হয়, তেমনি কাজের মানও উন্নত হয়। ঘরে-বাইরে নানা রকম কাজ থাকে। সেগুলো সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে গেলে সময় ভাগ করে নেওয়াও জরুরি।
২) উৎযাপন করতে শিখুন
শত ব্যস্ততার মাঝে যেটুকু সময় পাওয়া যায়, সেই সময়টুকু চুটিয়ে মজা করতে শিখুন। দু’-তিন দিন কাজ থেকে ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। একেবারেই সময় না থাকলে অফিস ছুটির পর সিনেমা দেখতে কিংবা কোথাও খেতে যেতে পারেন। অফিসের কাজ থেকে ছুটি পেয়ে কোমর বেঁধে বাড়ির কাজ সম্পন্ন করতে গেলে কিন্তু হবে না।
৩) কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন
কোনো একটা দিন অতিরিক্ত সময় কাজ করলে পরের দিন নিজেকে উপহার দিন। তা খুব দামি কিছু না-ও হতে পারে। বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেতে পারেন। একটা দিন বাস-ট্রেনের টিকিট না কেটে, ট্যাক্সি বা অ্যাপক্যাবের জন্য খরচ করতে পারেন।
মন্তব্য করুন