বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১ জুন, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বিজয়নগরে লিচু বাগানে পর্যটকদের ভিড়

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাগানে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লিচু। রসালো, সুমিষ্ট এ ফলের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদিনই দূর-দুরান্ত থেকে বাগান দেখতে আসছেন দর্শনার্থীরা। বাগানে ছবি তুলাসহ অনেকে আবার ফেরার সময় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন লিচু। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা বিজয়নগর লিচু বাগানের চিত্র এটি। 

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকার এসে উপজেলার আউলিয়া বাজার থেকে লিচু নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীভাবে চাহিদা মিটিয়ে এসব লিচু যাচ্ছে দেশের অন্যান্য জেলায়। বিজয়নগরের লিচুর স্বাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় জেলা ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও পরিবার পরিজন নিয়ে বাগান ঘুরতে আসছেন দর্শনার্থীরা। 

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো: আব্দুল হান্নান বলেন, ‘গণমাধ্যম ও ফেসবুকে লিচুর ছবি, নিউজ দেখে বন্ধুদের নিয়ে এখানে এসেছি। সরেজমিনে এসে দেখি বাগানগুলোতে থোকায় থোকায় লাল লাল সুমিষ্ট লিচু ঝুলছে। দর্শনার্থীদের ভিড় বাগানগুলতে। এখানের লিচু অনেক স্বাদ ও মিষ্টি। 

লিচু বাগানী মো. শরিফ বলেন, ‘প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশপাশের উপজেলা, জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে থেকে দর্শনার্থীরা আমার বাগানে ঘুরতে আসেন। ঢাকা, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, আশুগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, সিলেট  এসব এলাকা থেকেও আমার বাগানে মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে আসেন দর্শনার্থীরা। আমি চেষ্টা করি তাঁদের সর্বাত্মক সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য।’ 

মো. শরিফ আরও বলেন, দর্শনার্থীরা বাগানে এসে ঘুরে দেখেন। অনেকে ছবি তোলেন, আবার ফেরার পথে লিচু কিনে নিয়ে যান। আমি প্রতি ১০০ লিচু ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি। এই পর্যন্ত আমার বাগান থেকে ৮ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে। 

এদিকে এখন বাজারে পুরোদমে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের লিচু। দাম হাতের নাগালের মধ্যে থাকায় খুশি বাগান মালিক ও ক্রেতারা। সেই সঙ্গে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেশ চাহিদাও বেড়েছে। বেড়েছে বেচা-কেনাও। 

আউলিয়া বাজারে রাস্তার পাশে ঝুড়িতে করে লিচু বিক্রি করছেন বিক্রেতা।

বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিচুর চাষ শুরু হয় প্রায় ৩০ বছর  আগে থেকে। উপজেলার সীমান্তঘেঁষা পাহাড় পুর, সেজা মুড়া, মকুন্দুপুর, চানপুর,মিরাসানি,বিশ্নপুর,সহ আরো অনেক গ্রামে লিচুর চাষ হয়ে থাকে। 

এ উপজেলায় উৎপাদিত লিচুর মধ্যে পাটনাই, বোম্বাই, এলাচি, চায়না-৩, বেদানা ও স্থানীয় জাতের লিচু রয়েছে। এখানকার মাটি লিচু চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। লিচু বেশ মাংসল রসালো ও সুমিষ্ট হওয়ায় জেলার বাইরেও বেশ কদর রয়েছে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে লিচুর আকার ছোট হলেও বাম্পার ফলন ও সুমিষ্ট হওয়ায় খুশি বাগান মালিকরা।

গত কয়েকদিন আগে ঘূর্নিঝড় রেমালের তান্ডবে লিচু বাগানিদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেন কিছু বাগান মালিকরা।

মন্তব্য করুন