আফ্রিদি আহাম্মেদ, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০ জুলাই, ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

হরিরামপুর জোনাল অফিস

পল্লী বিদ্যুতের ইঞ্জিনিয়ার আফজালের দুর্নীতিকাণ্ড

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গ্রাহকের কাছ থেকে কৌশলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়। টাকার বিনিময়ে বানিজ্যিক ও আবাসিক লাইন সংযোগ। অফিসের খরচে লাইন নির্মাণ এবং সংযোগ প্রদান করে মোটা অংকের টাকা লেনদেন ইত্যাদি নাানা অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছে মানিকগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হরিরামপুর জোনাল অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আফজাল হোসেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আফজাল হোসেন খান ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে হরিরামপুর জোনাল অফিসে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করার পর থেকে হরিরামপুরের প্রতিটি গ্রামে নিজের পছন্দের দালালদের সিন্ডিকেট তৈরি করে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শুরু করেন রমরমা বাণিজ্য। আবাসিক মিটার সংযোগ থেকে শুরু করে বানিজ্যিক লাইন নির্মাণ, মেরামত ও সংযেগের আবেদন হলেই শুরু হয় নানান তালবাহানা। এক সময়ে গ্রাহক এক প্রকার জিম্মি হয়েই উপায়ান্তর না পেয়ে শরণাপন্ন হয় অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর। তারাই পাঠিয়ে দেয় ইঞ্জিনিয়ার আফজালের কাছে। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে আফজাল নিজের পকেট ভারি করছেন বিগত তিন বছর ধরে।

হরিরামপুর জোনাল অফিসের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানায়, আফজাল স্যার এই অফিসে যোগদান করার পর থেকেই অফিসের নিয়ম পাল্টে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। তাকে টাকা না দিলে একটি কাজেও স্বাক্ষর করেন না তিনি। শুধু তাই নয়। তার কারণে পল্লী বিদ্যুতের অনেক লস হচ্ছে। যেমন, ঝিটকা নতুন পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে যে সংযোগটি দেওয়া হয়েছে, সেই সংযোগটি করা হয়েছে ৪ টি খুঁটির। প্রথমে দুই খুঁটির আবেদন করে তার পাঁচ দিন পর আবারও দুই খুঁটির আবেদন করে অফিসের খরচে লাইন সংযোগ করা হয়েছে আফজালের নেতৃত্বে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছে সম্পূর্ণ টাকাই তারা কয়েকজন ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

মক্কা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী শেখ সেলিম বলেন, আমার মিটারের সমস্যা দেখা দিলে ইঞ্জিনিয়ার আফজাল স্যারকে জানাই। পরবর্তীতে লোক পাঠানোর কথা থাকলেও কোনো লোক পাঠায় না তারা। যার কারণে আমার মিটার জ্বলে যায়। আমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে আফজালকে জানাই বিষয়টা। তিনি আমাকে নতুন মিটারের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা চায়। আমি টাকা জোগাড় করে পরের দিন ওনাকে টাকা দিলে, আমার প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র শিল্প মিটার সংযোগ দেয়। ঝিটকা বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুধীর বিশ্বাস জানান, আমার বাসায় লাইন নিতে চার লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা তো আমি ঘুষই দিয়েছি তাদের। এর নেতৃত্বেও ছিল ইঞ্জনিয়ার আফজাল।

ঝিটকা আলমদি গ্রামের আলম হোসেন বলেন, আমার নতুন খুঁটির জন্য আমি বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি পরে আরো পাঁচ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে এই খুঁটির জন্য।

অভিযোগের ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের হরিরামপুর জোনাল অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আফজাল হোসেন খান বলেন, যারা এসব অভিযোগ করেছে তাদের হয়তো স্বার্থে আঘাত লাগছে। কিন্তু আমি কোনো লেনদেনের সাথে জড়িত না।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের হরিরামপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সামিউল কবির বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো যদি কোনো অনিয়ম হয় তবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

 

মন্তব্য করুন