
প্রকাশিত: ১১ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
লাকসাম উপজেলার (নিকাহ রেজিস্ট্রার) কাজীর বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ের নিবন্ধন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী বদিউল আলমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
এব্যাপারে কাজী বদিউল আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৮ জুলাই (সোমবার) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর মা পান্না আক্তার।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন সাতবাড়ীয়া গ্রামের আবদুর রবের ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া কন্যা রিফাত জাহান ঝুমুর (১৩) ও একই এলাকার আবদুল হালিম পুত্র রাজমিস্ত্রি সরোয়ার হোসেন শাখাওয়াত (২১) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্রে ৩ জুলাই প্রেমিক সাখাওয়াত সহ কয়েকজন যুবক প্রেমিকার বাড়ীর থেকে ঝুমুরকে তুলে নিয়ে যায়। মেয়ের পরিবার ঘটনার একদিন পরে জানাতে পারেন অত্র ইউনিয়নের কাজী বদিউল আলম জাল জালিয়াতির মাধ্যমে গত ২৪ এপ্রিল ছাত্রীর ভূয়া জন্ম সনদ তৈরী করে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে মাধ্যমে লাকসাম পৌরসভার রাজঘাট এলাকায় তার নিজস্ব কার্যালয়ের এই বাল্যবিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।
ছাত্রীর মা পান্না আক্তার বলেন, কয়েকজনের কাছে বিষয়টি শুনে আমি বাধ্য হয়েই কাজী অফিসে যাই। সেখান থেকে সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেখতে পাই জাল জালিয়াতির করে কাজী বদিউল আলম আমার না বালিকা মেয়েকে শাখাওয়াতের সঙ্গে বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করেছেন। আমার স্বামী আবদুর রবের সাথে আমার বিবাহ হয় ২৫ জুন ২০১০ সালে কিন্তু কাজী ভূয়া জন্ম সনদ তৈরি করে ভূয়া জন্ম সনদে জন্ম তারিখ দেয় ৫ মার্চ ২০০৬ সাল। এছাড়াও আমার মেয়ের প্রকৃত জন্ম নিবন্ধন ১৪ নভেম্বর ২০১১ সাল ভূয়া সনদ তৈরি করে তার বয়স দেয় ১৮ বছর। কাজী আমাদের না জানিয়ে বাল্য বিয়ে পরিয়ে দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করেছে, সে আমার মেয়ের জীবন গলাটিপে হত্যা করেছে আমিসহ সমাজের মানুষ এ কাজীর বিচার চায়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কান্দিরপাড় এলাকার এক বাসিন্দা জানান, কাজী বদিউল আলম বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নকল রেজিস্ট্রার বই ব্যবহার করে বাল্যবিয়ে রেজিস্ট্রি করে। পরে কেউ কাবিননামা চাইলে কাবিননামা দিতে অস্বীকার করে। এছাড়া রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন জায়গায় বর ও কনের জন্মের তারিখ লিপিবদ্ধ করা হয় না। এমনকি বিবাহ পড়ানো ব্যক্তি, সাক্ষী, কনে ও কাজির সইও থাকে না। বেআইনি প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের জন্য এসব অভিনব কৌশল অবলম্বন করা হয়।
বাল্যবিয়ের বিষয়ে কাজী অফিসে গিয়ে কাজী বদিউল আলমকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে ওই কাজীকে একাধিকবার ফোন করে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল হাই সিদ্দিকী জানান, কোনমতেই বাল্যবিয়ের সুযোগ নেই। এ বিষয় অভিযোগ পেয়েছি কাজী এমনটা করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন