নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বানভাসি এলাকায় ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর

ছবি: সংগৃহীত

উপরে বৃষ্টি। নিচে বন্যার পানি। ভিজে ভিজে খাবারের রদস সংগ্রহ। ভেলায় ছোটাছুটি আশ্রয় কেন্দ্র ও বাড়ী। এভাবে শরীরে জড়ানো ভেজা কাপড়ে দীর্ঘ সময় কেটে যাচ্ছে বানভাসিদের। এতে সর্দি-জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। চলতি দ্বিতীয় দফা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পানি কমে বন্যার উন্নতি হলেও মঙ্গলবার রাতে ভারী বর্ষণে ফের পানি বাড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টিতে আরো পানি বাড়ে। উন্নতি ও অবনতির এ সময়ে এখনো জাগেনি বন্যার্ত এলাকার ঘর-বাড়ী, রাস্তা-ঘাট। চারদিকের বিস্তৃর্ণ জলরাশিতে ঘর-বাড়ীগুলো ভাসছে ছবির মত। বানভাসিদের জীবন চলছে ভেলায় অথবা চৌকির উপর চৌকি বসিয়ে কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রের ঘিঞ্চি পরিবেশে। অনবরত বৃষ্টিতে ভিজে চলছে তাদের সকল কাজ কর্ম। শরীরে ভেজা কাপড়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায় তাদের। এতেই সর্দি-জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

বামনডাঙ্গার মুড়িয়ার চরের বানভাসী শাহের আলী, শাহজাহান আলী, মাইনুল, মতিয়ার, তেলিয়ানীর সোলজার হোসেন, জাবদ আলী, খোকন মিয়াসহ অনেকেই তাদের আঞ্চলিক ভাষায় জানান, ম্যালাদিন থাকি বউ, ছাওয়া-পোয়াক নিয়া হামরা বানের পানিত ভাসি আছি। খমকে কমে, খমকে বাড়ে। তার উইপরা খালি ঝড়ি। কতখোন তেষ্টা যায় কনতো। ভেজা গাওয়ে থাইকতে থাইকতে জ্বরোত পইড়ছে বাড়ী সুদ্দা সগাই। পেটোত নাই ভাত, তার উইপরা অসুখ। এ্যালা হামরা কি কইরমো। কোনঠে যামো মাতাতে আইসপ্যানাইহছে না।

সর্দি-জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত কালীগঞ্জের করুণা সরকার, ঝরু, বিমল, হরিশচন্দ্র, মেনোকা, চারুবালা, জামাল উদ্দিন, নুর বখত, হাফিজুর রহমান, তুফান বর্মন জানান, ঐষধ কিনবের যামো তাকো পাবার নাইগছি না। হুর আজ ফির পানি বাড়বের নাইগছে। কনতো কেমন করি পাই।
সরেজমিন বামনডাঙ্গা, মুড়িয়া, কালীগঞ্জের কুমড়িয়ারপাড়, ভবানন্দেরকুটিসহ বানভাসী বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। পয়:নিষ্কাষণ সমস্যা ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে অনেকেই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বন্যার্ত এলাকায়।

নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাহেদুর রহমান পলাশ জানান, বন্যার্ত এলাকায় আমাদের মেডকেল টিম কাজ করছে। এছাড়াও প্রতিদিন জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী আউটডোরে ব্যাবস্থাপত্র ও ঔষধ নিয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি হয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন কেউ কেউ।

মন্তব্য করুন