স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

চাচাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেল

আটক মো. হাসান। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ চাচাকে ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের জরুরবাড়ী বাজারে। এ ঘটনার মুলহোতা পাশ্ববর্তী বানারীপাড়া উপজেলার ইলুহার গ্রামের মো. হাসান (৩৭) নামের একজনকে গ্রেফতার করে বরিবার সকালে পিরোজপুর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলা সুত্রে ও ভুক্তভোগী সিদ্দিকের কাছ থেকে জানা যায়, বানারীপাড়া উপজেলার ইলুহার গ্রামের দোকানী সিদ্দিক তালুকদারের (৫৯) সাথে তার ভাতিজা মো. হাসান ও তাদের আত্নীয়দের জমিজমা বিরোধ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলায় সিদ্দিকের পক্ষে রায় আসবে এটা অনুমান করেতে পেরে হাসান তার আত্নীয় স্বজনদের নিয়ে সিদ্দিককে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্রের ছক তৈরি করেন। ছক অনুযায়ী শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে সিদ্দিক দোকান বন্ধ করে রাস্তা হেটে বাড়ি যাওয়ার সময় তাকে হাসান সহ হাসানের আত্নীয় আল আমিন (৪০), রহিম তালুকদার (৪৫), সফিকুল ইসলাম (২৮), আবুল হোসেন (২৫) ও মো. শাহিন (২৫) মিলে সিদ্দিককে একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিকসায় তুলে নেয়। অটোতে তুলে তারা সিদ্দিকে বেদম মারপিট করে। একসময় তারা সিদ্দিককে নিয়ে বানারীপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী স্বরূপকাঠি উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের জরুরবাড়ী বাজারের বিজের কাছে নিয়ে আসে। সেখানে এসে তাকে অটো থেকে নামিয়ে তার কোমরে লুঙ্গিতে একটি কৌটা গুজে দিয়ে মাদক বিক্রেতা বলে ডাকচিৎকার দিয়ে লোকজনকে জড়ো করে। একপর্যায়ে হাসান তার মোবাইল দিয়ে স্বরূপকাঠি থানায় ফোন দিয়ে মাদক বিক্রেতাকে আটকের খবর জানায়। খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার এস আই গোলাম হাফিজ ও এএসআই মো. ইয়াছিন ঘটনাস্থলে গিয়ে সিদ্দিককে আটক করে। এসময় তার কোমরে গুজে থাকা কৌটা তল্লাসী করে ৯০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে সিদ্দিকের দেয়া তথ্যনুযায়ী পুলিশের কিছুটা সন্দেহ হলে পুলিশ সিদ্দিকের সাথে হাসানকেও থানায় নিয়ে আসে। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে সিদ্দিক জানায় মামলা সংক্রান্ত বিরোধের জেলে তাকে হাসান পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। পরদিন শনিবার পুলিশ আটককৃতদের এলাকায় এবং বানারীপাড়া থানায় যোগাযোগ করে সিদ্দিকের সাথে হাসানদের বিরোধের সত্যতা খুঁজে পায়। এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাসান তার ষড়যত্রের কথা স্বীকার করে। পরে শনিবার রাতে এস আই মো. গোলাম হাফেজ বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় ৬ জনকে নামীয় ও আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। সত্য ঘটনা উদঘাটনের সংবাদ পেয়েই ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীরা আত্মগোপন করে।

এবিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, সিদ্দিক তালুকদার ও হাসানকে আটকের পর সিদ্দিক জানায় তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। পরে আটককৃতদের এলাকায় তদন্ত করে জানতে পারি মামলা নিয়ে বিরোধের জেরে সিদ্দিক তালুকদারকে মাদক মালায় ফাঁসাতে হাসান এ নাটক তৈরি করেছিলো। এ ঘটনায় মামলা দায়ের শেষে হাসানকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত ইয়াবার নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। জব্দকৃত ইয়াবার মূল্য আনুমানিক ২৭ হাজার টাকা বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন