
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই, ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালন করছে আন্দোলনকারীরা। এরই ধারাবহিকতায় রাজধানীর বিভিন্ন গরুত্বপূর্ণ সড়ক দখলে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশের-আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি অবস্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সহ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি, ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী জুড়ে ।
সকাল, ১০টার পর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে প্রগতি সরণিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকে পরিস্থিতি।
ব্র্যাকের শিক্ষার্থীদের অবরোধের এক পর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া দেয়। এ সময় প্রথমবার শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে তারাও পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন, এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ফাটায়।
রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকরীরা।
আগুনের ঘটনা ঘটেছে রামপুরা পুলিশ বক্সে । বেলা ১১টা ৩০ এর দিকে আগুন দেয় আন্দোলনকরীরা, সে সময় বক্সের পাশে থাকা কিছু বাইকে আগুন দেয় তারা । একই সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২ ও ৩ নম্বর গেটের সামনের সড়কে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ঘটনা ঘটেছে ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজলা সংলগ্ন টোলপ্লাজা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে । শত শত আন্দোলনকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুঁড়ি ও ইট ছড়িয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তারা। ফলে শত শত গাড়ি মহাসড়কে আটকে লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
উত্তেজিত আন্দোলনকারীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’সহ নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে।
ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় দেখা গেছে সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তাদের হাতে লাঠিসোঁটাও দেখা গেছে। মহাসড়কে টায়ার ও কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে। এতে কোনো যানবাহন ঢাকা থেকে বের হতে বা প্রবেশ করতে পারছে না।
কর্মসূচির মধ্যে ঢাকার মহাখালী ও নাখালপাড়া এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অবরোধের কারণে বেলা ১২টার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে দেশজুড়ে, এ কারণে সকাল থেকেই রাজধানীতে বিআরটিসি-মেট্রোরেল ছাড়া অন্য কোনো গণপরিবহন নেই বললেই চলে। দু-একটা বেসরকারি পরিবহন চলাচল করলেও সেগুলোতে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল ছিল একেবারে সীমিত রয়েছে। এতে অফিস ও কর্মস্থলগামী মানুষদের চরম ভোগান্তিতে পড়ে। রাজধানীর আজিমপুর, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পুরানা পল্টন ও গুলিস্তান এলাকা ঘুরে একই চিত্রই দেখা যায়।
যারফলে, ঢাকার সড়কে রিকশা, মোটরসাইকেল আর সিএনজিচালিত অটোরিকশাই যাতায়াতের প্রধান ভরসা। ফলে, এসকল যানবাহনে হাঁকানো হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। - এস
মন্তব্য করুন