
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই, ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
নীলফামারীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভাঙ্গচুর করে ও হামলা চালায়। এতে শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
বৃহঃস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়, পিটিআই মোড়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, সংবাদকর্মী ও আন্দোলনকারীরা সহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা মাঠে নেমেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকাল ১০টার দিকে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের পিটিআই মোড়ে সমবেত হতে থাকেন। সেখান থেকে তাঁরা শহীদ মিনার চত্বরে এসে সেখানে ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে অগ্রসর হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও চৌরঙ্গী মোড়ে অবস্থিত পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন। এরপর আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভাঙচুর করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীরা পিটিআই মোড়ে অবস্থান নিয়ে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় পুলিশের সঙ্গে লাঠিসোঁটা হাতে রাস্তায় নামেন ছাত্রলীগের সদস্যরা। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল ও গুলি করে।
আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে এটিএন নিউজের ক্যামেরা পারসন সাদ্দাম হোসেনের মাথা ফেটে যায়। সেই সঙ্গে ১০ জন পুলিশ আহত হয়। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হন এনটিভির সাংবাদিক ইয়াছিন মোহাম্মদসহ অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী।
বেলা একটার দিকে আন্দোলনকারীরা পিছু হটলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শহরে লাঠিসোঁটা হাতে টহল দিতে দেখা যায়। এ অবস্থায় শহরের বেশির ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুর রহিম বলেন,‘ রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন ৩ জন। এরমধ্যে একজন গুরুতর আহত হওয়ায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থনান্তার করা হয়েছে। পুলিশ সদস্য দুইজন ও তিনজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও ১২জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম বলেন,‘আজকে নীলফামারী জেলায় কিছু ছাত্র কোটা আন্দোলনের জন্য মূলত মিছিল করার চেষ্টা করে। আমাদের পুলিশ সদস্য নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে। যেন তারা ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হয়। একটা পর্যায়ে দেখা গেল তারা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংস করছে। পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়ছে। এতে আমাদের ১০জনের অধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ও সরকারি সম্পত্তি যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য পুলিশ অল্প কিছু টি.আর শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।’
মন্তব্য করুন