
প্রকাশিত: ৪ জুন, ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতার এক মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোচাশহর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান মণ্ডলসহ অসংখ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর নামে মামলা করেছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ীর সমর্থক জনৈক শহিদুল ইসলাম। গোবিন্দগঞ্জ থানায় দায়ের করা এ মামলায় গত ৩ জুন ১১৯ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এই দিন বিকালে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (চৌকি আদালত) ১১৯ আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। পরে বিচারক মো. নাজমুল হাসান তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, আদালতে হাজতি একজন ও ১১৮ জন সশরীরে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অথচ ভোটের দিন বেলা ১১টায় ঘটনার কথা মামলার এজাহারে উল্লেখ থাকলেও ঘটনার কোন আলামতও জব্দ করা হয়নি।
প্রকৃত পক্ষে গত ২১ মে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় কোন সহিংসতা ছাড়া সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন ঢাকা থেকে সরেজমিন অনেক সাংবাদিক গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ আর একটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের প্রতিবেদনে সুষ্ঠু ভোটের বিষয়টি উঠে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নির্বাচনে কোন সহিংসতার অভিযোগ করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের হয়রানি করতে এ মামলা করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মী।
মামলার বরাত দিয়ে একজন আইনজীবী জানান, সহিংসতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় ২০৩/২৩ নং মামলাটি ২৫ মে রুজু করা হয়। মামলায় ঘটনার সময় ২১ মে সকাল ১১টা উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ ভোটের দিন ১১টায় মামলা, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে বাদী উল্লেখ করেন। অথচ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে ভোটের দিন মোটরসাইকেল প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিলেন ১৫ জন। আর একজন মাদ্রাসার সুপার মোজাহারুল ইসলাম ছিলেন একটি কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে।
কারাগারে পাঠানো উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ফিরোজ খানুন, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, উপজেলা কৃষকলীগের দফতর সম্পাদক বোরহান উদ্দিন লেলিন, উপজেলা যুবলীগের সদস্য জলিল, কোচাশহর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আশাদুল ইসলাম, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল হোসেন, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রোকন আকন্দ।
এ ছাড়া মামলার এজাহারনামীয় ২০ থেকে ২৫ জন মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থক হলেও বাকিরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
বাদীর অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আব্দুল লতিফ প্রধানের (মোটরসাইকেল) কর্মী-সমর্থক সংঘবদ্ধ হয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করে হত্যার উদ্দেশে মারধর, অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে তার দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে থানায় মামলা করেন।
মন্তব্য করুন