রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

প্রকাশিত: ১২ জুলাই, ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

উত্তরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে কমেনি দুর্ভোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উত্তর বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও বানবাসী মানুষের দুভোগ কমেনি। দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।  গত ২৪ ঘন্টায় উত্তরের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা,  নীলফামারী ও বগুড়ায় নদী ভাঙনে ১১৩ টি বসতবাড়ি বিলিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় চলাচলের ভোগান্তি বেড়েছে বহুগুন।  দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। উত্তরের ৬ জেলায় এখনও পানিবন্দি রয়েছে দুই লক্ষাধিক মানুষ। 

 ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পাউবোর প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে বানভাসি পরিবারগুলো বসতবাড়িতে বাঁশের মাচান, নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এতে প্রায় ৬২ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানায়, বন্যায় প্রায় ৬২ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নামে আসা ঢলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। শুক্রবার বিকালে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নিচু এলাকার বাড়িঘর, রাস্তা ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে ১৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকার ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ পানবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এদিকে, সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চর সরুলিয়া, খাবুলিয়া, চর মহনপুর, পূর্ব তেকানী, মহব্বতেরপাড়া ও জন্তিয়ারপাড়া এবং পাকুল্লা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর, আচারেরপাড়া, খাটিয়ামারী, পূর্ব সুজাইতপুর ও বসুনিয়াপাড়ার বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে। গাইবান্ধায় পানিবন্দি রয়েছে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ।  এই ৬ জেলায় ১৮৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে বন্যার কারনে। বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা অতি নগন্য। 

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।  নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে  ২৫ লাখ।

মন্তব্য করুন