অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ, ২০২৪, ০২:৫৭ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয় পুলিশ ও নৌবাহিনী

ছবি সংগৃহীত

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এবং এর ২৩ নাবিককে মুক্ত করতে সোমালি পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুন্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশ।

সোমবার (১৮ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ভারতীয় কমান্ডোরা জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি রুয়েনে অভিযান চালিয়ে ১৭ ক্রুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার পর এমভি আবদুল্লাহয় অভিযানের এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটিকে গত সপ্তাহে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে পরবর্তী সময় সোমালিয়ার উপকূলে নেওয়া হয়েছে। প্রায় এক দশক শান্ত থাকার পর এটি সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা গত নভেম্বর থেকে ২০টিরও বেশি জাহাজ ছিনতাই চেষ্টার সর্বশেষ ঘটনা।

রয়টার্স জানিয়েছে, সোমালিয়ার পুন্টল্যান্ড এলাকাটি অসংখ্য জলদস্যু চক্রের ঘাঁটি। আধা স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলের পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, তারা উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে।

একটি বিবৃতিতে পুন্টল্যান্ড পুলিশ বলেছে, আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের পরিকল্পনা করছে—এমন রিপোর্ট পাওয়ার পর পুন্টল্যান্ড পুলিশ বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। তবে এ বিষয়ে ভারতের নৌবাহিনীর কাছ থেকে রয়টার্স মন্তব্য জানতে চাইলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) পুন্টল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা জলদস্যুদের কাছে পাঠানোর সময় মাদক পরিবহনকারী একটি গাড়ি জব্দ করেছে তারা।

রোববার রাতে আবদুল্লাহর অবস্থান ছিল সোমালিয়া উপকূলের গারাকাড এলাকা থেকে উত্তর দিকে ৪৫-৫০ মাইল দূরে; ওই স্থানটি গদবজিরান উপকূল থেকে ৪ মাইল দূরে।

এর আগের দিন, শনিবার (১৬ মার্চ) সোমালি উপকূলে ৪০ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে এমভি রুয়েনকে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডোরা। জাহাজটির ১৭ ক্রুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার পাশাপাশি জাহাজে থাকা ৩৫ জলদস্যুর সবাইকে তারা আটক করেন।

তিন মাস আগে আরব সাগরে মাল্টার পতাকাবাহী ওই জাহাজ দখল করে নেওয়ার পর নাবিকদের জিম্মি করে জলদস্যুরা। এরপর ওই জাহাজ ব্যবহার করে বিভিন্ন নৌযানে তারা হামলা চালাতে থাকে।

বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে ছিনতাইয়ের সময়ও জলদস্যুরা এমভি রুয়েনকে ব্যবহার করে থাকতে পারে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্সের ধারণা।

ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস তর্কশ গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি পৌঁছেছিল। কিন্তু নাবিকরা সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকায় সে সময় অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকেন ভারতীয় নৌ সেনারা।

পূর্ব আফ্রিকা উপকূলে জলদস্যুতা নির্মূলে কাজ করে যাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্সও তাদের ‘অপারেশন আটলান্টার’ অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখছে।

ইউরোপীয় এই বাহিনী আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ সরকার তাতে সায় দেয়নি বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলম দুদিন আগে জানিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন