রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই, ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কারফিউ শিথিল, স্বাভাবিক রাজধানীর জনজীবন

ছবি: সংগৃহীত

সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার ঘিরে শুরু হওয়া সহিংসতার মধ্যে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সরকার। একই সঙ্গে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় জন্য সেনা মোতায়েন করা হয়।

তবে বুধবার (২৪ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে কারফিউ সিথিল করার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজধানীসহ দেশের পরিস্থিতি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মিরপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, ফার্মগেট, শাহবাগ, পল্টন, যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই সড়কে রিকশা-সিএনজি, পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাক ও সিটিং সার্ভিসের বাসগুলো চলাচল করছে। এছাড়া, রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে দুরপাল্লার বাসও ছেড়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। ফলে বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, মেট্রোরেল বন্ধ ও সড়কে পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গগামী রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। অন্য টার্মিনালগুলো থেকেও দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাস। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে যাত্রীর চাপ অনেকটাই কম বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।

পাঁচ দিনের অচলাবস্থার পর বুধবার সীমিত আকারে ইন্টারনেট সংযোগ ফেরায় লেনদেন হয় ব্যাংক, বিমা ও শেয়ারবাজারে। আসতে শুরু করে রেমিট্যান্স। তবে ব্যাংকে টাকা তোলার পরিমাণ বেশি হলে ও জমা দেওয়ার চাপ প্রত্যাশার চেয়ে কম। সচল হয়েছে এটিএম বুথগুলোও, কেটেছে নগদ টাকার সংকট। বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা তুলতে পারছেন স্বজনেরা।

রাজধানীর মিরপুরের আলেয়া আক্তার শ্রাবণী ‍নামের এক গৃহবধূ বলেন, তার স্বামী কাতার প্রবাসী। সংসার খরচের জন্য টাকা পাঠালেও এতোদিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় তিনি তা তুলতে পারেননি। আজ (বৃহস্পতিবার) ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পেরেছেন তার মনে স্বস্তি ফিরেছে।

এদিকে, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত খোলায় খেটে খাওয়া মানুষের মুখেও ফুটেছে হাসি। অফিসগামীরাও স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। কর্মস্থলে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে চান তারা। দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এমন প্রত্যাশা করছেন সবাই।

রামপুরা এলাকার সাহেদ আলী নামে একজন বলেন, অফিস টাইম সকাল ১১টায় হওয়ায় ঘণ্টাখানেই আগেই বাসা থেকে বেরিয়েছি। রাস্তায় বাস পেয়েছি তবে যানজট থাকায় অফিসে পৌছাতে প্রায় ২০ মিনিট লেট হয়েছে। তবে অফিস করতে পারায় ভালো লাগছে।

ঘুরতে শুরু করেছে ভ্যান-রিকশা ও কল-কারখানার চাকা। এতে স্বস্তি ফিরেছে শ্রমিকদের মধ্যে।

মহিদুল ইসলাম নামের বনানী এলাকার এক রিক্সাচালক বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। রিক্সার চাকা ঘুরলে আমাদের ঘরে চাল-ডালের ব্যবস্থা হয়। গত কয়দিনের অচলাবস্থার পর বৃহস্পতিবার থেকে কিছুটা রুটি-রুজির ব্যবস্থা হচ্ছে।

সারা দেশে খুলেছে গার্মেন্টস কারখানাগুলো। কয়েকদিনের বিরতির পর কাজে যোগ দেন লাখো শ্রমিক। বন্দর সচল হওয়ায় পণ্য রপ্তানিও শুরু হয়েছে। চলছে আমদানিও।

থমথমে পরিস্থিতি কেটে যাওয়ায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সবজির পাইকারি বাজার। ঢাকার বাজারে সবজির সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে, দামও কমতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে স্বস্তির আমেজ। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা কাটিয়ে আগের মতোই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ট্রাকভর্তি সবজি ঢুকছে ঢাকার সবচেয়ে বড় এই পাইকারি বাজারে।

কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েকদিনের অচলাবস্থার পর এখন চাহিদার চেয়েও বেশি সবজি আসছে ঢাকার বাজারে, যার প্রভাব পড়ছে দামেও।

আরবি/ এইচএম

মন্তব্য করুন