কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬ জুলাই, ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কুড়িগ্রামে বন্যায় বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর মতো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে দুধকুমার নদের পানিও। ফলে দুধকুমার নদের তেড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ মিটারের বেশি জায়গাজুড়ে ভেঙ্গে গেছে। এতে করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব গ্রামের ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। বন্যার পানি গ্রাম ছেড়ে প্রবেশ করছে নাগেশ্বরী পৌরসভার বেশ কয়েকটি এলাকাতেও। বাঁধ ভাঙ্গায় পানির শ্রোতে ভেঙ্গে যাচ্ছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী অনেক এলাকার। 

বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার মাইদুল ইসলাম জানান, ভাড়ি বৃষ্টি আর নদীর পানি বাড়ায় পানির বেগ সইতে না পেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। ফলে আমাদের এলাকার সবার বাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। অনেকের ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। 

ওই এলাকার জয়নাল আবেদিন জানান, সকাল থেকে পানি হুহু করে পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বাঁধের বাকি অংশগুলো ভেঙ্গে গিয়ে সবার বাড়ি তলিয়ে যাবে। তাই অতি দ্রুত বাঁধ ভাঙ্গন ঠেকাতে না পারলে দুর্ভোগে পড়বেন এখানকার হাজার হাজার মানুষ।

বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি জানান, ভাড়ি বৃষ্টি আর উজানের পানির কারণে শনিবার সকালে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ইতোমধ্যে ৮-১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাঁচ্ছে এতে করে বাকি অংশ ভেঙ্গে গেলে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নসহ অন্যান ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন তারা ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধা ৬টায় পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও 

ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার ও নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে এই নদের পানি উলিপুরের হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  এছাড়াও ধরলার পানিও কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার ও তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, এটা পুরাতন রাস্তা। আমাদের অন্যদিকে কাজ চলমান থাকলেও এখনও সেদিকে (মিয়াপাড়া এলাকায়) রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। তারপরও রাস্তার ভাঙ্গন ঠেকাতে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

নাগেশ্বরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, 'নাগেশ্বরী উপজেলার দশটি ইউনিয়ন ইউনিয়নই প্লাবিত হয়েছে৷ আজ বামনডাঙ্গার একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যার পানি নাগেশ্বরী পৌর এলাকাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য আমাদেরকে কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা রয়েছে। আমরা চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে বন্যার্তদের তালিকা নিচ্ছি। 

চেয়ারম্যানদের বরাত দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, 'দশটি ইউনিয়নের ১৪ হাজার পরিবারের অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছে।

মন্তব্য করুন