নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ, ২০২৪, ০৫:০৮ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

চাকরির জন্য উপাচার্যের পায়ে পড়লেন ছাত্রলীগ নেতা

ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের একেক এক বির্তক । এবার চাকরির জন্য তার পায়ে লুটিয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় উপাচার্য ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।

পায়ে পড়া ওই নেতা হচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল। তিনি ছাত্রলীগের একাকার গ্রুপের নেতা। ক্যাম্পাসে মইনুল নিজেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চাকরির জন্য’ ছাত্রলীগের এই নেতা এমন কাজ করেছেন বলে ক্যাম্পাসে আলোচনা চলছে। তবে ছাত্রলীগের এই নেতার দাবি, চাকরির জন্য নয় বরং ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি চবি উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত বন্ধের অনুরোধ করতে তিনি অধ্যাপক শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েছিলেন।

জানা যায়, গত ১৯ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বন্দর নগরীতে অধ্যাপক শিরীণ আখতারের বাসার নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। চবি উপাচার্য হিসেবে শেষ কর্মদিবসের দায়িত্ব পালন করতে সেসময় ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন তিনি।

এ সময় পথ আটকিয়ে নিয়োগের জন্য উপাচার্যের পা ধনেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। গতকাল সোমবার (২৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা যায়, লাইভলেন এলাকার বাসার নিচে ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার লিফটে করে বাসার নিচে নামলে লিফটের সামনে থাকা চবি ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতা উপাচার্যের পথ আটকে ধরেন।

এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল চাকরির জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন। একই সময়ে আরেক সহ-সভাপতি মুজিবর রহমানও পায়ে পড়ে যান।

ওই সময় সেখানে চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নীল রঙের গেঞ্জি পরিহিত ব্যক্তিটি ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রপের নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি রোমেল হোসেন এবং সাদা শার্ট পরিহিত ব্যক্তিটি একই গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি মুজিবর রহমান।

মইনুল ইসলাম রাসেল পায়ে পড়লে এ সময় সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারকে খুবই উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে শুনা যায়। তিনি বলেন, আমার চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নাই। আমার পা ছাড়।

তিনি তার বাসার নিচ থেকে চলে যেতে বলেন এবং পুলিশ ডাকবেন বলে জানান। শিরীণ আখতার গাড়িতে উঠে গেলে মইনুল ইসলাম রাসেল তার গাড়ির সামনে এসে পথরোধ করেন। বারবার তার গড়ির জানালা খুলতে অনুরোধ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ শহরের কাজীর দেউরি লাইভলেন এলাকার বাসা থেকে সকালের দিকে সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চাকরির জন্য তার গাড়ির পথরোধ করে এবং খুবই অনুনয় বিনয় করে।

এর আগের দিন ১৯ মার্চ নিজের শেষ কর্মদিবসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল ও দপ্তরে ৪০ জনের অধিক ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য।

মন্তব্য করুন