
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই, ২০২৪, ০৫:৩০ এ এম
অনলাইন সংস্করণ
রূপালী বাংলাদেশ সংবাদ প্রকাশের পর জাহেরা বিবির চুরি যাওয়া সেই ছাগলের মূল্য দেওয়া হয়েছে। ভূক্তভোগীর অভিযোগ ছাগল চোর আটক না হলেও থানা পুলিশের এসআই আব্দুল মুমিন এসে ছাগলের মূল্য বাবদ তাকে ২০হাজার টাকা দিয়েছে। আর টাকা পাওয়ার পর এমনটাই জানালেন ভূক্তভোগী জাহেরা বিবি। বিষয়টি জানার জন্য গত সপ্তাহে জাহেরা বিবির দোকানে গেলে তিনি অকপটে স্বীকার করেন তাকে ওই পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি খুশি নন। আর পুলিশের টাকা দেওয়ার বিষয়টি রবিবার ১৫ জুলাই রাত সাড়ে সাত টার দিকে রুপালী বাংলাদেশের কাছে অস্বীকার করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান।
গত ২৩ জুন রূপালী বাংলাদেশ অনলাইনে, বদলগাছীতে কৃষক লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইনে সংবাদটি গুরুত্বসহকারে প্রকাশ হয়। এরপর হিরো ছাগল চুরির সংবাদ নিয়ে বইতে থাকে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি গোপনে সমাধানের জন্য উঠেপড়ে লাগে স্থানীয় কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি। অবশেষে ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর থানার ওসির নির্দেশে চুরি যাওয়া ছাগলের মূল্য দিলেন এসআই আব্দুল মুমিন।
জাহেরা বিবি অভিযোগের সুরে বলেন, আমার ছাগল চুরি হয়েছে, কে চুরি করেছে, সেটা আমার জানার অধিকার আছে। আর টাকাটা কে দিল, সেটাও জানার অধিকার আছে। তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি মিলে বিষয়টি মিমাংসার জন্য বলেন। অবশেষে ছাগল চুরি যাওয়া প্রায় তিন সপ্তাহ পর থানার এসআই মুমিন এসে আমার হাতে ২০হাজার টাকা দিয়ে গেছে।
তবে তিনি চুরি যাওয়া ছাগলের দাম পেলেও চোরের নাম জানতে চাইলে বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় চোরের নাম কি দরকার? আপনার চুরি যাওয়া ছাগলের মূল্যে হিসাবে ২০হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে, আর কোনো কথা বলার দরকার নেই। এদিকে এসআই আব্দুল মুমিন এর মাধ্যমে ছাগলের মূল্য ২০হাজার টাকা পরিশোধ করার ঘটনায় এলাকাবাসী জাহেরা বেগমের ছাগল চুরির অভিয়োগটি সত্য বলে ধরে নিয়েছেন।
এর আগে গত ২১ জুন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সানাউল হক হিরোর (৪০) বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ দায়ের করেন জাহের বিবি নামের এক নারী। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহেরা বেগমের সঙ্গে একই এলাকার ছামসুল আলমের ছেলে ছানাউল হক হিরোর সাথে পারিবারিক বিষয়ে মনোমালিন্য ও পূর্ব বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত কুরবানি ঈদের দুই দিন আগে শনিবার ১৫জুন দুপুরে জাহেরা বেগমের ২৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল (খাসি) বিবাদী হিরোর বাড়ির গেটে গেলে সে অসৎ উদ্দেশ্যে ছাগলটি বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর ছাগলটি (খাসি) অনেক খোঁজাখুঁজি করে পায়নি ভূক্তভোগী ওই নারী। পরে বিভিন্নভাবে জানতে পারে ছাগলটি চুরি করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয় হিরো। অভিয়োগের বিষয়টি জানার পরে সানাউল হক হিরো বিভিন্নভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধরের হুমকি ধামকি দিয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
বিষয়টি জানার জন্য বদলগাছী উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সানাউল হক হিরোর মুঠোফোনে (০১৭৩৩-১০৮৭৮৮) ফোন দিয়ে এই প্রতিবেদকের পরিচয় দেওয়া মাত্রই তিনি একটু ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরে আবারও ফোন দিলে মোটরসাইকেলের উপর আছি বলে জানান তিনি। একটু কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বালুর ব্যবসা করি, ব্যস্ত থাকতে হয়।
তবে অপর গণমাধ্যমকর্মীকে তিনি বলেন, আমি চুরি করিনি ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রশ্ন আসেনা। টাকা দেওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা । তিনি আরও বলেন, আমি আদালতে মানহানি মামলা করেছি কয়েক দিনের মধ্যে মামলার নোটিশ পাবেন জাহেরা বেগম। মানহানি মামলার কাগজ চাইলে তিনি বলেন, কাগজ আমার কাছে নেই। কাগজ গুলো নওগাঁ আমার মামাতো এক ভাইয়ের কাছে রয়েছে।
এবিষয়ে রাত ৮টার দিকে এসআই আব্দুল মমিন এর সাথে এই প্রতিবেদক তার ব্যবহৃত (০১৭১৮-৯৩৪৩৯৭, ০১৮৮৬-০৬৮৬৬৪) মুঠোফোনে ফোন দিলে পরিচয় পাওয়ার পর কেটে দেন। তবে তিনি অপর গণমাধ্যমকর্মীর কাছে ছাগলের মূল্য বাবদ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, অভিযোগকারী জাহেরা বেগমকে ছাগলের মূল্যে বাবদ পুলিশ কেন টাকা দিতে যাবে?
২০ হাজার টাকা কে দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে আমি শুনেছি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তারা মিমাংসা হয়েছে। এবং কিভাবে হয়েছে কিছু জানিনা।
মন্তব্য করুন