
প্রকাশিত: ২৮ জুলাই, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দীর্ঘ দিন শোষন, বঞ্চনা, গনতন্ত্রহীনতায় মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনে অত্যাচার শুরু হলে তাদের রক্ষার জন্য জনগনও নেমে পড়ে। ছাত্রদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনসহ অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এটি ছাত্র জনতার আন্দোলন, এমন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে দেখিনি। একইসাথে এমন বর্বর ও নিপিড়ন মুলক হত্যাকান্ড জাতি কখনও প্রত্যক্ষ করেনি। আন্দোলনে নিহতদের পরিবার পরিজনকে সম্মানজনক ক্ষতিপূরন প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে।
রোববার (২৮ জুলাই) জাতীয় পার্টির যৌথ সভা শেষে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ ভেবেছিল শোষন ও বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ হবে কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন হলেও এটি আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ আন্দোলন ছিল না। এটি ছাত্র জনতায় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের জেরে মেট্রোরেল, সেতু ভবনসহ সরকারি ভবনে আগুন বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যাদের গাফিলতি, নিরাপত্তাহীনতার কারণে সরকরী স্থাপনায় আগুন-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, দায় তাদেরকেই নিতে হবে। দায়িত্বে ব্যর্থতার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ।
তিনি বলেন পার্টির যৌথ সভায় সর্বসম্মতভাবে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন করে। সেই সাথে চলমান অহিংস ছাত্র আন্দোলনের প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
সভায় ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনে নিহত ছাত্র জনতার আত্মর মাগফেরাত কামনা করে পরিবার পরিজেনের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ন্যায্য দাবি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমনের প্রক্রিয়াকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নিহত শহীদদের মামলার এজাহারে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ না দিয়ে মিথ্যা এজাহার দাখিলের নিন্দা জানানো হলো। নিহত ছাত্র/ছাত্রীরা বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। এবং প্রকৃত শহীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সভায় ছাত্র হত্যার সাথে জড়িত সকল সরকারী কর্মকর্তা, উস্কানিদাতাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সভা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানী/ নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ছাত্রদের নামে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃত সকল ছাত্র ও নেতৃবৃন্দকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবার পরিজনকে সম্মান জনক ক্ষতিপূরন প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। অনতিবিলম্বে দেশের ইন্টারনেট সহ সকল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম খুলে দিতে হবে। অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। প্রকৃত ছাত্রদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে ।
একইসাথে সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় হামলার উদ্বেগ প্রকাশ করে, কেপিআই ভুক্ত স্থাপনা সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব সরকারে নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
আরবি/এস
মন্তব্য করুন