
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ, ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ভারত মহাসাগড়ে জলদস্যুদের কবলে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী জাহাজের ২৩ জন নাবিকের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইলের সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে। সে নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে থেকে এসএসসি পাস করে। টাঙ্গাইলের কাগমারি এমএম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্যবহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী নেন।
একমাত্র ছেলের জিম্মির খবর শুনে বাবা হারুন অর রশিদ হাউমাউ করে কাঁদচ্ছেন। মা সালেহা বেগম বুক চাপড়িয়ে কাদঁছেন আর বিলাপ করছেন। একমাত্র বোন মিতু আক্তার ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থণা করছেন। তার ভাই যেন জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে তাদের কাছে আবার ফেরত আসে। তাদের কান্না থামাতে গ্রামের লোকজন বাড়িতে এসে ভির করছেন। গ্রামের লোকজন ও আত্মীয় স্বজনরা বাড়িতে এসে তাদের শান্তনা দিচ্ছেন। জিম্মির খবর পেয়ে স্বজনরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন। তাদের একটাই দাবি সরকার যেন দ্রুত সাব্বিরকে মুক্ত করে আনে।
সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা বলেন, সাব্বিররা এক ভাই এক বোন। সে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বিরের বাবা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। সাব্বিরের চাকুরী হওয়ার পর তার মা শয্যাসায়ী স্বামীকে নিয়ে সহবতপুর তার বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। সহবতপুরের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামে এখন কেউ আর তার পরিবার থাকেন না। একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির। তার কিছু হয়ে গেলে তাদের আর চলার উপায় থাকবে না। সরকারের কাছে দাবি জানাই সাব্বিরসহ সবাইকে যেন জিম্মি দশা থেকে দ্রুত মুক্ত করে।
সাব্বিরের একমাত্র বোন মিতু আক্তার বলেন, আমার ভাই গত সোমবার বিকেলে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে যে বিষুব রেখা অতিক্রম করলাম। মাথা ন্যাড়া করে ছবি আপলোড করেছে। এক মাস আগে সে বাড়ি আসছিল। একদিন থেকেই সে চলে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে সবাই আতংকে দিন কাটাচ্ছি। বাবা মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে আমার ছেলেকে এনে দাও। আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা মাকে বাচাঁনো যাবেনা। অতি দ্রুত আমার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন