
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই, ২০২৪, ১১:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
আজ শুক্রবার দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মাকসুদ কামাল বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিকট হতে আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে হলসমূহ সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।’
ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘পুলিশ যে ক্যাম্পাসে এসেছে, সেটি আমাদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাদের আসতে হয়েছে। কখনো কখনো এটি তারাও চেয়েছে।১৬ তারিখ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রাম ছিল শহীদ মিনারে আর ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ছিল রাজু ভাস্কর্যের। দু’পক্ষই সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই শেখ রাসেল টাওয়ারের সামনে আমরা পুলিশকে অবস্থান নিতে বলেছি। তাদের তাও বলেছি তারা যেন কোনো টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ না করে।’
উপাচার্য বলেন, ‘ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্যই পুলিশ ক্যাম্পাস অবস্থা নিয়েছে। কখনো কখনো আমরা শুনেছি বাহির থেকে হলগুলোকে আক্রমণ করা হবে, কখনো শুনেছি বহিরাগতরা আক্রমণ করবে আবার কখনো শুনেছি প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা আক্রমণ করবে। সেই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপগুলো নিয়েছি।’
সংঘর্ষ শুরুর দিন হতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পরের দিন পর্যন্ত প্রক্টোরিয়াল টিম এবং হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ এবং হাউজ টিউটরবৃন্দ সারারাত জাগ্রত ছিলেন দাবি করে উপাচার্য বলেন, ‘১৫ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত আমাদের প্রক্টোরিয়াল টিমের সদস্যরা সারারাত জাগ্রত ছিল আর দিনভর কাজ করেছে। হলগুলোর প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটররাও সারারাত জাগ্রত ছিল। কখনো কখনো আমরা রাতের বেলা জুমে মিটিং করে প্রভোস্টদের ইনস্ট্রাকশন দিয়েছি। আমাদের যতটুকু ক্যাপাসিটি ছিল সেই ক্যাপাসিটি থেকেই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘১৫ জুলাই বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শহীদুল্লাহ হলের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে সে সময়ও আমরা পুলিশকে শহীদুল্লাহ হলে প্রবেশ করতে বারণ করেছি। এই হলের সামনে পুলিশ ৬ ঘণ্টা অবস্থান করেছে তারপরও কিন্তু আমরা তাদের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। পরের দিন আমরা যখন হলগুলো বন্ধ করে দিয়েছি, সেদিনও পুলিশ হলগুলোতে প্রবেশ করার জন্য চেয়েছিল আমরা তাদের সেই অনুমতিও দেইনি। পুলিশ তাদের নিজস্ব কোর্স অফ অ্যাকশন হিসেবে যা করেছে তা তারা নিজেরাই করেছে।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং স্যার এ এফ রহমান হল ও রোকেয়া হলের হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন