বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২ জুন, ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বগুড়ায় নির্বাচনের রেষারেষিতে হামলা, দুইজনের মৃত্যু

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ার শিবগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের রেষারেষি ও মসজিদ কমিটির দ্বন্দ্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত চার ভাইয়ের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাকিরুল ইসলামসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে চার ভাইয়ের ওপর হামলার খবর শুনে স্ট্রোক করে মারা গেছেন আরও একজন। 

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালাউদ্দিন (৫০) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মেঘাখোর্দ্দ গ্রামের রাস্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। 

নিহতের পরিবার জানায়, হামলায় আরও তিন ভাই আলম মিয়া (৫৫), শেখ সাদি (৪৫), আবু সালেক (৬৫) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চার ভাইয়ের ওপর হামলার খবর শুনে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তোফায়েল আহমেদ নামের আরেক ভাই নিজ বাড়িতে স্ট্রোক করে মারা গেছেন। 

পুলিশ জানায়, মারপিটের ঘটনায় নিহতের ভাতিজা বোরহান মণ্ডল শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আহত সালাউদ্দিন মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দেউলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাকিরুল ইসলাম ও মন্টু মিয়া। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, মেঘাখর্দ্দ মসজিদ কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দেউলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাকিরুল ইসলাম ও স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান উদ্দিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সদ্য সমাপ্ত হওয়া উপজেলা নির্বাচনে এই দুই ব্যক্তি পৃথক দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করে। এনিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছালে হামলার ঘটনা ঘটে। গ্রামের রাস্তার ওপর দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা সাকিরুল তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বোরহানের পক্ষের লোকজনকে মারপিট করে। 

মামলার বাদী বোরহান মণ্ডল বলেন, মসজিদ কমিটির ঝামেলা এখানে কোনো বড় ঘটনা নয়। উপজেলা নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোট দেয়া নিয়ে আমার সঙ্গে যুবলীগ নেতা শাকিরুল রেষারেষি শুরু করে। তখন থেকেই সে হামলার চেষ্টা করছিল। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আমার বাবা-চাচাদের পেয়ে শাকিরুল প্রথমে হামলা চালায়। পরে অন্যদের হামলার নির্দেশ দেয়।  

বোরহান আরও জানান, হামলার পর আমার বাবা ও তিন চাচাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চার ভাইয়ের এমন অবস্থা জেনে আমার চাচা তোফায়েল আহমেদ স্ট্রোক করে মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বড় চাচা সালাউদ্দিনও মারা গেছেন। 

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউফ বলেন, মারামারির ঘটনায় সালাউদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। তার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মারপিটের ঘটনাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হবে। দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

মন্তব্য করুন