
প্রকাশিত: ১২ ঘন্টা আগে, ০১:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
আনোয়ার হোসেনঃ
যশোরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত এক নারী শনাক্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর বেলা ইবনেসিনা হসপিটালে নমুনা পরীক্ষার পর এই রুগীর শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, আক্রান্ত নারী রুগীর বাড়ি সাতক্ষীরা কলারোয়ায়। তার মেয়ে যশোর সদর শহরে চাকরি করে। মেয়ের কাছে থাকা অবস্থায় এই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। যশোর ইবনেসিনা হসপিটালে নমুনা পরীক্ষার পর তার শরীরে করোনার ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। ইবনেসিনা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানানোর পর আক্রান্ত নারীকে যশোর সদর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। আগের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থার এখন উন্নতি হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে একাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু কিটের অভাবে তাদের করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। সেখানে মেশিনারীজ থাকলেও কিট নেই। ফলে এখনি করোনা পরীক্ষা সম্ভব নয়।
যশোর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, চারপাশে কোভিড-ওমিক্রন আতঙ্ক বিরাজ করছে। যশোর ইবনেসিনা হসপিটালে চিকিৎসাধীন এক নারীর শরীলে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সেখানকার ডাক্তার ওই রোগীর চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পাঠিয়েছেন। তিনি নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, যতটা সম্ভব জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলা, খোলা জায়গায় এমনকি ডের মিটার দূরত্ব বজায় থাকা ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর হাত ধোয়া সাবান-পানি দিয়ে। ব্যবহার্য জিনিসপত্র জীবাণু নাশক পদার্থ দিয়ে পরিষ্কার করে নেয়া। দরজার হাতল, সুইচ, লিফটের বাটন জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি এর লক্ষণগুলি হলো জ্বর কাশি ছাড়াই মাথা, গলা, পিঠ ও জয়েন্টে ব্যথা, নিউমোনিয়া, ক্লাটকীয়ভাবে ক্ষুধা হ্রাস পাবে। কোভিড- ওমিক্রনএক্সবিবি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত ও মৃত্যুর হারও বেশি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষণগুলি অত্যন্ত তীব্র হয়ে উঠবে ও স্পষ্ট লক্ষণগুলির অনুপস্থিতিতেও পরিবর্তন ঘটবে। অল্প সময়ের মধ্যে এটি সরাসরি ফুসফুসের “জানালা” প্রভাবিত ও নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখাতে শুরু করে। কোভিড ওমিক্রন-এক্সবিবি সংক্রামিত অল্প সংখ্যক রোগীকে জ্বর-মুক্ত এবং ব্যথা-মুক্ত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, তবে এক্স-রেতে হালকা নিউমোনিয়া দেখা যায়। এছাড়া নাকের গহ্বরের মধ্য দিয়ে তুলার সোয়াব পরীক্ষা করে কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ও নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল পরীক্ষার সময় মিথ্যা নেতিবাচক পরীক্ষার উদাহরণ বাড়ছে। তাই এই ভাইরাসটি খুবই ধূর্ত। এর ফলে ভাইরাসটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। সরাসরি মানুষের ফুসফুসকে সংক্রামিত করে। ভাইরাস নিউমোনিয়া সৃষ্টি ও তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
মন্তব্য করুন