
প্রকাশিত: ৬ জুলাই, ২০২৪, ১১:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্য নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে লেবার পার্টি। যুক্তরাজ্যের ৫৮ তম প্রধানমন্ত্রী হলেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার রডনি স্টারমার বা কিয়ার স্টারমার। এবারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ১৪ বছর পর কনজারভেটিভ পার্টিকে পেছনে ফেলেছে লেবার পার্টি।
ব্রিটিশ আইনজীবী কিয়ার স্টারমারের জন্ম লন্ডনে হলেও তিনি বেড়ে উঠেছেন দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডের সারেতে। ১৯৮৫ সালে লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট এডমন্ড হল থেকে সিভিল ল'-এর ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
৬১ বছর বয়সী স্টারমার রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী। তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ড পুলিশিং বোর্ডের মানবাধিকার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাবলিক প্রসিকিউশন দপ্তরের পরিচালক থাকাকালীন তিনি স্টিফেন লরেন্স হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি বড় মামলা লড়েছিলেন । ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়ায় অবদান রাখায় ২০১৪ সালে ‘নাইট’ উপাধি পেয়েছেন স্টারমার।
কিশোর বয়সে স্টারমার শ্রম রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টি ইয়ং সোশ্যালিস্টের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত গিল্ডহল স্কুল অফ মিউজিক অ্যান্ড ড্রামায় একজন জুনিয়র প্রদর্শক ছিলেন। বাঁশি, পিয়ানো, রেকর্ডার এবং বেহালা বাজাতেন। রাজনীতির মাঠে সাড়া ফেলে দেওয়া স্টারমার একজন দক্ষ ফুটবলার। ক্লাব ফুটবলে আর্সেনালের ভক্ত তিনি।
১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত, স্টারমার একটি ম্যাগাজিনের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্টারমার ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে হাউস অফ কমন্সে নির্বাচিত হন । পেছনের সারিতে থাকা সংসদ সদস্য হিসেবে অসফল হওয়া প্রচারাভিযান ব্রিটেন স্ট্রংগার ইন ইউরোপের সমর্থন করেন তিনি। জেরেমি করবিনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীসভায় ছায়া সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ব্রেক্সিট নিয়ে প্রস্তাবিত দ্বিতীয় গণভোটের পক্ষে ছিলেন । ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির পরাজয়ের পর দলটির নেতা জেরেমি কর্বিন পদত্যাগ করেন। স্টারমার একটি বামপন্থী প্ল্যাটফর্মে ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে কর্বিনের স্থলাভিষিক্ত হন । বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে তার মেয়াদকালে স্টারমার তার দলের মধ্যে ইহুদি-বিরোধিতা দূর করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন । স্টারমার ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে লেবারকে বিজয়ী করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে স্টারমার তার সরকারের জন্য অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্ন শক্তি, অপরাধ এবং শিক্ষার মতো বিষয়গুলোকে লক্ষ্য করে পাঁচটি মিশন নির্ধারণ করেছিল ।
যুক্তরাজ্য নির্বাচনে ভোটের আগে স্টারমার এক শব্দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার করেছেন। তা হচ্ছে—পরিবর্তন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সরকার গঠনের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পাওয়ার পর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, পরিবর্তনের কাজ অবিলম্বে শুরু হয়, তবে কোনো সন্দেহ নেই, আমরা ব্রিটেনকে পুনর্গঠন করব। আমাদের কাজ জরুরি এবং আমরা আজই তা শুরু করছি। যারা এত দিন যুক্তরাজ্যকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, লেবার পার্টির নতুন সরকার ‘নিঃশব্দে তাদের প্রতিহত করবে’
মন্তব্য করুন