
প্রকাশিত: ২১ মার্চ, ২০২৪, ০৭:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রাজশাহীতে স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুক মামলায় রায়হান আলম (২৭) এর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। রায়হান আলম রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার মোঃ রবিউল ইসলামের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে লাবনী খাতুন (২৬) ছোট বেলায় তার মা মারা যায়। তার বাবা পাগল। অষ্টম শ্রেনীতে পা রাখতেই একই গ্রামের এক ছেলের সাথে ১৪ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। সে এক কন্যা সন্তানের জননী। স্বামীর কাজের সুবাদে তারা কেশরহাট পৌর এলাকায় হরিদাগাছি গ্রামে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি ভাড়া আসেন। সেখানে হরিদাগাছী গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে রায়হান লাবনীকে বিয়ের প্রলোভনসহ আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখিয়ে তার সাথে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এদিকে রায়হানের প্রেমে অন্ধ হয়ে তারই পরামর্শে আগের স্বামীকে তালাক দেয় লাবনী। পরে মেয়েটিকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বাড়ির দরজায় রেখে পালিয়ে যায় রায়হান। ঘটনা অন্যদিকে গড়াবে ভেবে (ধর্ষন মামলা) ধামাচাপা দিতে প্রতারণার আশ্রয় নেয় রায়হানের পরিবার। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কেশরহাট পৌর কাউন্সিলর আসলাম আলীসহ কয়েকজনের যোগসাজশে গভীর রাতে মেয়েটির অভিভাবক ছাড়া ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তা ২৫ ফেব্রুয়ারী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মাত্র সত্তর হাজার টাকা দেনমোহর উল্লেখ করে নাটকীয় বিয়ের মাধ্যমে লাবনীকে রাখা হয় রায়হানের পরিবারে। এরপর থেকে শুরু হয় মেয়েটির উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন। পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে বাড়িতে তালা বন্ধ করে লাবনীকে স্বামী, ননদ ও শ্বাশুড়ি মিলে চালায় নির্মম নির্যাতন।
পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ৫ মার্চ রাত ৮ টার দিকে শয়ন ঘরে রায়হান বাঁশের লাঠি দিয়ে লাবনীকে বেধড়ক পেটায়। পরের দিন ৬ মার্চ সকালে রান্নাঘরে গেলে ননদ মনিরা খাতুন (২৪) তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং তার শাশুড়ী রোকসানা বেগম (৪৭) যৌতুকের টাকার জন্য লোহার গরম সিক দিয়ে ডান হাতের তালুতে ছ্যাকা দিয়ে পোড়া জখম করে। তারা যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজের জীবন বাঁচাতে ধুরইল গ্রামে তার বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসে লাবনী। সেখানে তার ছোট ভাই সোহেল রানা'র সহযোগীতায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ওসিসি-তে ভর্তি হয় এবং চিকিৎসা গ্রহণ করে।
চিকিৎসা শেষে ১০ মার্চ মেয়েটি বাদি হয়ে মোহনপুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রায়হান, তার বোন ও মা এর নাম উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ওই মামলায় জামিন নিতে আদালতে উপস্থিত হলে বিচারক শুনানি শেষে রায়হানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন