নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবার, ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

শেখ হাসিনা হতাশ ও বিচলিত, জানালেন ছেলে জয়

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে টানা প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে শেখ হাসিনা হতাশ ও বিচলিত বলে জানিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি মনে করছেন, তার বিগত দিনের প্রচেষ্টা সবই ব্যর্থ হতে চলেছে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা অংশ নেবেন কি না এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তার ছেলে।

প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী টাইমস ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) টাইম ম্যাগাজিনের অনলাইন সংস্করণে চার্লি ক্যাম্পবেলের ‘বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী শেখ হাসিনা কীভাবে একটি অপ্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তন করতে পারেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি ইস্যুতে কথা বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থতি নিয়ে আমার মা অনেক হতাশ ও বিচলিত। তিনি মনে করছেন তার গত ১৫ বছরের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে চলেছে। বাংলাদেশে নির্বাচন ঘোষণা হলে তাতে অংশ নিতে শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন কি না এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, এ ব্যাপারে ‘এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা যদি এক বছর বা ১৮ মাস দেশ চালাতে চায়, তাহলে আমার বিশ্বাস এটা ঠিক আছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরবেন কি না জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘আমার কখনোই রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কী ঘটতে পারে তা কে জানে? আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। জয় দাবি করেন, তিনি সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। আমরা সবাইই কোটা আন্দোলন দেখে অবাক হয়েছিলাম। আসলে আমি (পারিবারিক) হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বলেছিলাম, ৩০ শতাংশ কোটা বেশি হয়ে যায়, আমাদের এটি কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা উচিত। তখন একজন মন্তব্য করেন, আমরাও মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি। আমি মজা করে বলেছিলাম, এজন্যই তো আমি ৫ শতাংশ রাখতে বলেছি! শেষ পর্যন্ত কোটা ইস্যু অগ্নিশিখার মতো বৈষম্য ও রাজনৈতিক দমনপীড়নের প্রতি বাংলাদেশের জনসাধারণের ক্ষোভকে উসকে দেয়। জুলাই মাসে এই অস্থিরতা তীব্র আকার ধারণ করে।

তবে কোটা আন্দোলনে সময় তার মায়ের প্রশাসনের ক্র্যাকডাউন নিয়ে ভুলের কথা স্বীকার করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। অর্ধেকের বেশি হতাহত সন্ত্রাসীদের কারণে হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার দিকে ইঙ্গিত করেন।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আলোচনা কোনো কোনো মহল থেকে উঠছে। এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে কীভাবে নিষিদ্ধ করবেন? এটা আইনত সম্ভব নয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট অবসান ঘটে শেখ হাসিনার প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি ভারতেই রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ দুশোর কাছাকাছি মামলা দায়ের হয়েছে। চরম বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন, বেশির ভাগ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে চলেও গেছেন। 

মন্তব্য করুন