রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই, ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

দেশে জঙ্গিবাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি সংগৃহীত

'সরকার জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে' এবিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ আগের মতো সমস্ত রাজনৈতিক দল গুলাকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায় ।

আজ বিকেলে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র আন্দোলন ৬ সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে নাটক করা হয়েছে, এটা রাজনৈতিক জীবনে কেউ দেখেনি। যে ডিবি অফিসে বসে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। ত্রাস সৃষ্টি করে এগুলো করা হয়েছে। আবার ডিবি অফিস এখন ভাতের হোটেল এটা সবাই জানে। এধরনের একটা নাটক করে পুরো জাতিকে ছোট করা হয়েছে। এটি নিয়ে হাইকোর্টও বলেছেন। এরপর আর কিছু বলার নেই।

তিনি বলেন, সরকারের কোন রাজনৈতিক  প্রতিনিধিত্ব নেই। আমি দেখি না, আপনার তো বলেন আওয়ামী লীগ সরকার। এখানে আওয়ামী লীগ সরকারের নেই। একটি অদৃশ্য শক্তির মধ্য দিয়ে প্রচলিত হচ্ছে। এটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কথা শুনলে বোঝা যায়। 

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অফিস সামনে সমাবেশ করা যাবে এমন নির্দেশ দিয়েছে ডিএমপি। এটি কোনভাবে হয়। অন্য কেউ কেন পারবে না । প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী অবশ্যই মানুষের হয়ে কাজ করা উচিত। কয়েক দিন অনেক ঘটনা ঘটেছে, দেখছেন রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। যাকে পাচ্ছে তাকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। জাতি তো বোকা নয়, এরা এগুলো বুঝবে না।

কিশোরদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, আবার রিমান্ডে নেয়া হয়।  হাসপাতাল থেকে তুলে নেয়া হয়েছে, এটা কখনো আমরা দেখিনি।

তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলন কিন্তু আজ বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারততের গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। জাতিসংঘ এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। অনেকে বলেছে, এটি স্বৈরাচার সরকার।

তিনি বলেন, এ আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শুধু ছাত্র নয়, মারা গেছে নানা পেশা ও শ্রেণির লোক। পত্রিকায় দেখলাম,  মারা যাওয়ার সংখ্যা দিয়েছে কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরে বলেন জামায়াত বিএনপি কিন্তু আমি তো এখানে জামায়াত বিএনপির কোন লোক দেখলাম না।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জানি কে এ আন্দোলনের উস্কানি ও অর্থ দিয়েছেন। কই আগে তাহলে থামলেন না কেন, এরমানে আপনি জেনে থামলেন না। আপনি শান্তি চাননি। আবার বলে, আন্দোলনে জামায়াত বিএনপি ঢুকেছে, আবার বলে তৃতীয় শক্তি,  বলেন বিদেশী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন কে কেউ রুখতে পারেনি, পারবে না। নতুন প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী সমালোচনা করে তিনি বলেন, রংপুরে আবু সাঈদকে নিয়ে যা বলেছেন, তা মুখে বলা যাচ্ছে না, এতো অশ্রাব্য ভাষা। এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। এরা তো শহীদ, এরা তো আমাদের সন্তান।

ছাত্ররা তো বেশি কিছু চায় নি, তারা কোটা সংস্কার চেয়েছিল। তখন তো তারা আপনাদের বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জমিদারি ভাব নিয়ে সরকার বসেনি, আদালতের ওপর ভর করেছে। সেই বলে কি এই চাওয়ার জন্য এতো গুলো তাজাপ্রাণ ঝরবে।

একটা কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের কোন আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি, এবারও হবে না।

জামায়াত নিষিদ্ধ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র বিশ্বাসী। এটা তারা আগে করেনি কেন। এখন কেন করছেন। এ বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। নানা কৌশল করে সরকার নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে।

ছয় বছরের শিশু নিহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে, এর কি জবাব দিবে রাষ্ট্র। এ দায় কার? এ দায় সরকারকে নিতে হবে। সেজন্য বলি, দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ করুন।

এ দেশে জঙ্গিবাদের সবচেয়ে পৃষ্ঠপোষক হলো আওয়ামী লীগ। এর চেয়ে বড় কোন জঙ্গি নেই। ছাত্র আন্দোলন হত্যাকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিতকরে মির্জা ফখরুল।

মন্তব্য করুন