
প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সাবেক ও বর্তমান দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনারের (এসিল্যান্ডে) বিরুদ্ধে আদালতে ছয় লাখ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী।
সোমবার (৭ এপ্রিল) জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গোলাপ হোসেন নামের ওই ব্যবসায়ী শেরপুর আদালতের নালিতাবাড়ী সিআর আমলি আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবাদীরা হলেন– বকশীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মাসুদ রানা, নালিতাবাড়ী উপজেলার ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমান। মাসুদ রানা আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার ইউএনও ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুন মাসে আদালতের মাধ্যমে ২৫ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে কেনেন গোলাপ হোসেন। ওই বালু তাকে বুঝিয়ে দিতে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন নালিতাবাড়ী উপজেলার তৎকালীন ইউএনও মাসুদ রানা।
পরে মাসুদ রানা বদলি হয়ে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় চলে যান। নালিতাবাড়ীর বর্তমান ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমানকে চাঁদার ওই টাকা না দিলে বালু বুঝিয়ে দিচ্ছেন না বলে মামলায় দাবি করেন ব্যবসায়ী।
এ কারণে বাধ্য হয়ে নালিতাবাড়ীর সিআর আমলি আদালতে সোমবার বকশীগঞ্জের ইউএনও মাসুদ রানা, নালিতাবাড়ীর ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমানকে বিবাদী করে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেন গোলাপ হোসেন।
ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।
শেরপুর জজ কোর্টের বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক আধার সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে বালু ক্রয় করা হয়েছিল।
৯ মাস অতিবাহিত হলেও ইউএনও বালু বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। সাবেক ইউএনও এই বালু হস্তান্তরের জন্য ৬ লাখ টাকা চান। তিনি চলে গেলে বর্তমান ইউএনও এবং এসিল্যান্ড একই দাবি করেন। মামলা দায়েরের পর আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার বাদী গোলাপ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুরুতেই আমার কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ৬ লাখ টাকা চেয়েছেন। আমি অপারগতা প্রকাশ করার পরেই আমাকে আদালতে পাঠিয়েছেন। তারা বলেছেন, “আপনার বালু আদালত থেকে নেন। আমি দেবো না।” আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানার সঙ্গে সাংবাদিকরা ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দুটি চিঠি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে পড়তে বলে কল কেটে দেন। তার চিঠিতে বালু বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
নালিতাবাড়ির বর্তমান ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আমার সময়কার নয়, ওই সময় ইজারাদারের সাত দিনের মধ্যে বালু নিজ উদ্যোগে অপসারণ করে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে, তিনি তা করেননি। চাঁদাবাজির বিষয়ে আমি অবগত নই।’
মন্তব্য করুন