মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২ মার্চ, ২০২৪, ০২:২৬ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

মৌলভীবাজারে মাদকদ্রব্যের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ছবি সংগৃহীত

সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, লাইসেন্সধারী মদের দোকান থেকে মাসোহারা আদায়সহ নানা অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ এর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে ২৩ জনের স্বাক্ষরযুক্ত একটি অভিযোগ মাদক দ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করেছে ভুক্তভোগীরা। জেলা প্রশাসককেও এর কপি প্রদান করা হয়েছে।

জানা যায়, উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজারে যোগদানের পর থেকে সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি সরকারী কাজের চেয়ে গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজেই ব্যবহার করছেন বেশী। তিনি এজেলায় যোগদানের পর থেকে কমে গেছে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের অভিযান। বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে টাকা না দিয়ে নিচ্ছেন সেবা। এছাড়াও জেলার সকল বাংলা মদের লাইসেন্সধারীদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করছেন। না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানীর করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে লাইসেন্সধারী মালিক ও কর্মচারীরা মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগও দায়ের করেছেন।

বর্তমান উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজার জেলায় যোগদান করেন ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর। যোগদানের পর থেকেই লাইসেন্সসীদের কাছে মাসে ২০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে বসেন। সর্বশেষ তারা অতিষ্ঠ হয়ে ২৩ জনের স্বাক্ষরযুক্ত একটি অভিযোগপত্র ফেব্রুয়ারী মাসে মাদক দ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসককেও কপি দেন তারা। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে কিভাবে তিনি তাদের হয়রানি করছেন।

উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ রাঙ্গামাটি জেলায় থাকাবস্থায়ও তাঁর বিরুদ্ধে সরকারী বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণের অভিযোগ উঠে। সর্বশেষ তিনি রংপুর থাকাবস্থায়ও নানা অভিযোগ রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান অনেকে।

আরও জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় যোগদানের পর থেকেই সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্পট. চা বাগান, সিলেটে ব্যক্তিগত কাজে ও বিভিন্ন হোটেলে যাতায়াত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি জেলা সদরের একটি রিসোর্টে গিয়ে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার বা সুবিধাজনক সময়ে পরিবারের লোকদেরসহ সুইমিংসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ফ্রিতে নিয়ে থাকেন। তিনি ব্যক্তিগত কাজে গাড়িটি প্রায় সময় ব্যবহার করলেও ব্যক্তিগতভাবে জ্বালানী তেল খরিদ করেননা। সরকারী জ্বালানীতেই তিনি গাড়ি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয় তিনি প্রতিদিন সরকারী গাড়ি করে তার মেয়েকে ফ্লাওয়ার কেজি স্কুলেও পাঠান। সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে ক্লাবে গিয়ে অধিকরাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। তিনি জেলায় যোগদানের পর থেকে মাদকদ্রব্য বিরোধী অভিযান অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে।

অভিযোগকারী কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন ও সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারাবে। এমনিতেই বাংলা মদের দাম লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো এখন তা বেড়ে কোথাও কোথাও ১৩০ থেকে ১৭০ টাকায় লিটার বিক্রি হওয়াতে বিক্রি কমে গেছে জানান ব্যবসায়ীরা। এতে করে চা বাগানগুলোতে বেড়েছে অবৈধ মদের বিক্রি। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চেয়ে উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ (০১৯৭৫২২১৩০০) নাম্বারে মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করার পর পরিচয় জানতে পেরে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে ম্যাসেজ, হোয়াটসএ্যাপে নক করলেও তিনি আর রিসিভ করেননি বিধায় তার মতামত জানা যায়নি।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম রুপালী বাংলাদেশকে জানান, এবিষয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।

মন্তব্য করুন