শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৪৬ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

শ্রীমঙ্গলের ভূরভুরিয়া চা বাগান লেক প্রকৃতিপ্রেমিদের প্রশান্তির স্থান

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

টিলার ওপর সবুজ-শ্যামল চা-বাগান। সবুজের সমারোহ। আর হরেক প্রজাতির গাছ-গাছালি। এরই মাঝে একটি লেক। দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এমন মনোলোভা দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। নান্দনিক সৌন্দর্যের এ লেকটির অবস্থান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভুরভুরিয়া চা-বাগানে। যার নাম ভুরভুরিয়া চা-বাগান লেক।

উঁচু নিচু পাহাড়, দিগন্তজোড়া সবুজ চা-বাগানের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় চা-শহর শ্রীমঙ্গল। এটি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশে চায়ের রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত। তাছাড়া দেশে সবচেয়ে বেশি চা-বাগান শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত।

যেহেতু শ্রীমঙ্গলের প্রধান আকর্ষণ চা-বাগান, এখানে সবচেয়ে সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। বিশেষ করে চা-বাগানের লেকগুলো বর্ষাকালে সবচেয়ে সুন্দর রুপ ধারণ করে। তাই শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান ও চা-বাগান লেক খুবই প্রশান্তিদায়ক।

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে খুব কাছে ভুড়ভূড়িয়া লেক। যদিও অনেক চা-বাগানেই কম বেশি লেক রয়েছে। তথাপি এ লেকটির সৌন্দর্যই একটু আলাদা। উঁচু-নীচু টিলায় ঘেরা এ লেকটির দুর্বার আকর্ষণে অনেকেই ছুটে আসেন একটু প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে।

টিলায় টিলায় সবুজ-শ্যামল ঢেউ খেলানো চা-বাগান, সহজেই মনকে পুলকিত করে। এমন মনোমুগ্ধকর নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে মন-প্রাণ আনন্দে নেচে ওঠে।

এখানে আরো বাড়তি আনন্দ যোগায় বন্যপ্রাণীকূল।

পড়ন্ত বিকেলে লেকের পাশে সবুজ চা বাগানের ছায়াবৃক্ষে দেখা যায় অসংখ্য বানর। বানরে লাফালাফি আর লেক এলাকায় পাখিদের উড়াউড়ি আর কিচিরমিচি শব্দে মন চাঞ্চল্যকর হয়ে উঠে।

শ্রীমঙ্গল শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌমোহনা থেকে পাকা সড়কে কলেজ সড়ক হয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পেরুলেই ভাড়াউড়া চা-বাগান। এই চা-বাগানের ভেতর দিয়ে কাঁচা রাস্তায় আরো প্রায় দেড় কিলোমিটার

পাহাড়ের গা বেয়ে একটু হেঁটে যেতে হবে । হেঁটে চলার পথটি এতোই সুন্দর যে , হাঁটার ক্লান্তি আপনিই ভুলে যাবেন । আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিলেই দেখা মিলবে ভুরভুরিয়া লেকের।

স্বচ্ছ জলে টলমল লেকের চারদিকে মাটির পথে ঘুরে লেকটির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। টিলাগুলো লাল মাটির। টিলাগুলোতে সবুজ চা বাগানের সারি। চা-বাগানগুলোতে চোখে পড়ে ব্যস্ত চা কন্যাদের চা পাতা চয়নের দৃশ্য যা মনকে সহজেই আন্দোলিত করে।

জানা গেছে, চা-বাগানে সেচের জন্য তৈরি করা হয়েছে এই লেক। এই লেকের চারপাশে ১০০ হেক্টর টিলা ও সমতলে চা বাগান করা হয়েছে। সেচ কার্য ছাড়াও লেকে করা হয়েছে মাছ চাষও।

উঁচু-নিচু পাহাড় ঘেরা বন-বনানী আর নীল আকাশের সাথে যেন সবুজ পাহাড়ের গভীর এক মিতালি। নিজ চোখে না দেখলে শুধু শব্দের গাঁথুনি দিয়ে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল! এই বিচিত্র রূপ আর সৌন্দর্য এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন দেশী-বিদেশের প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ ছুটে আসছেন।

মন্তব্য করুন