ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ মে, ২০২৪, ০৬:৪০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সেবা না পেয়ে ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিসের হেল্পডেস্ক ভাংচুর

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বছরের পর বছর ঘুরেও কোন সহযোগিতা না পেয়ে অনেকটা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হেল্পডেস্ক ভাঙচুর করেছে সুশান্ত কুমার দাস নামে এক বৃদ্ধ। সোমবার (১৩ মে) সকালে ওই  বৃদ্ধ অে নকটা ক্ষুদ্ধ হয়ে হেল্পডেস্কে হামলা চালায়।

অভিযুক্ত ব্যাক্তি সুশান্ত কুমার দাস ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকার হরিহরপুর গ্রামের মৃত প্রবীর চন্দ্র দাসের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে সুশান্ত দাস নামে ওই ব্যক্তি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হেল্প ডেস্ক শাখার গ্লাস ভাংচুর করতে থাকেন। এ সময় তার মুখে শোনা গেছে হেল্পডেস্ক থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার কথা। তার অভিযোগ, এখানকার কেউ আমার কথা শুনে না, উত্তর দেয় না।  বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। তারপরেও কোন সমাধান নাই। সেই হেল্পডেস্ক থাকার চেয়ে না থাকায় ভালো। আমি রাখব না এই হেল্পডেস্ক।

 এমন কথা শেষ হতে না হতেই ব্যাগ থেকে লোহার রড বের করে গ্লাস ভাংচুর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।

এমন ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পারিবারের স্বজনরা জানান,২০১৩ সালে থেকে সুশান্ত কুমার দাস জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচ তলায় হেল্পডেস্ক শাখায় আবেদন করে । কিন্তু আজ-কাল বলে সময় ক্ষেপন করেন হেল্পডেস্কের দায়িত্বরতরা। এভাবে তিনি ১১ বছর ধরে হেল্প ডেস্কের বারান্দায় ঘুরাঘুরি করছেন। অবশেষে রাগে ক্ষোভে এমনটা করেছেন বলে ধারণা তার পরিবারের লোকজনের। এছাড়া তিনি কিছুটা মানুষিক ভারসাম্যহীন বলেও জানান তারা।

এ ঘটনার পর ডিসি অফিসের হেল্পডেস্ক ভাংচুরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। এতে নেটিজনরা বিভিন্ন মন্তব্যের ঝড় তুলেন।

তারা লিখেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যারা চাকরি করে। তারা নিজেদের জমিদার মনে করেন। কোন পরামর্শ বা সহযোগিতার জন্য গেলে তা সহজেই মিলেনা। কোন কিছু বললে সঠিক উত্তর দেয় না। এখন ব্যস্ত আছি বলে তাড়িয়ে দেয়। ডিসি মহোদয়ের কাছে তো দূরে থাক বারান্দায় উঠতে দেয় না কর্মচারীরা।

আরেকজন লিখেন, নিশ্চয়ই ওই ব্যক্তি ডিসি অফিসের কোন ব্যক্তি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বা কোন সহযোগিতা পাননি। তাই হয়তো রাগে ক্ষোভে তিনি ভাংচুরের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। এমন নানা মন্তব্য করেন নেটিজনেরা।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি.এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার বিস্তারিত পরে বলা যাবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি অত্যন্ত খারাপ একটি কাজ হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। তবে কেন ভাংচুর করেছে তা এখনোই বলা যাবে না। তদন্ত করে পরে জানানো হবে।

এর আগে গত বছরের ৮ জুলাই নাসির উদ্দীন (২৫) নামে অপর এক যুবক জেলা প্রশাসকের প্রবেশ দ্বারের কেঁচিগেটের তালা ভেঙ্গে বেলচা দিয়ে্আঘাত করে ডিসি অফিসের কক্ষসহ অফিসের ১০টি রুমের ৩১টি দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। এ সময় তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

গেল দু বছরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুই বার ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। যা অনাকাঙ্ক্ষিতের কথা জানিয়ে নিরাপত্তার অভাবকে দায়ি করছেন স্থানীয়রা।

মন্তব্য করুন