
প্রকাশিত: ১৭ মে, ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
খুলনায় তৃতীয় শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীর (১০) শ্লীলতাহানির অভিযোগে ঐ মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট (মাদ্রাসা প্রধান) মো. হাসিবুর রহমান হাসিবকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা সৈয়দ আলী হোসেন সড়কের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মো. হাসিবুর রহমান হাসিব শহীদ শেখ আবু নাসের দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট (মাদ্রাসা প্রধান) । এ ঘটনায় ঐ ছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করেছেন। শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রী বর্তমানে সোনাডাঙ্গা থানা সংলগ্ন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
ছাত্রীর মা জানান, তার ছেলে ও মেয়ে দুইজনই হাসিব হুজুর ও তার বউয়ের কাছে প্রাইভেট পড়ে। হুজুরের বউয়ের কাছে দুপুর ৩টার দিকে পড়তে যায়। বাসায় আসে আছরের নামাজের পর। আবার মাগরিবের নামাজের পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হুজুরের স্ত্রীর কাছে মাদ্রাসার পড়া শেষ করে হুজুরের কাছে কোরআন শরীফ পড়ে। হুজুরের স্ত্রীর কাছে ৮-১০ জন পড়লেও হুজুরের কাছে কোরআন শরীফ শুধু আমার দুই ছেলে-মেয়ে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার রাতে হুজুরের কাছে কোরআন শরীফ পড়ার সময় তিনি আমার ছেলেকে ওজু থাকা সত্ত্বেও ওজু করতে পাঠান। তখন আমার মেয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় হুজুর আমার মেয়েকে জোর করে ধরে রুমের মধ্যে নিয়ে বাতি নিভিয়ে দেন। এরপর আমার মেয়ের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌননীপিড়ন করে। এর মধ্যে আমার ছেলে ওজু করে আসলে তখন তিনি আমার মেয়েকে ছেড়ে দিয়ে দুজনকেই কোরআন শরীফ পড়ান। আমার মেয়ে পড়া শেষে বাসায় এসে চিৎকার করে কান্না করতে থাকলে ওকে কান্নার কারণ জানতে চাইলে সব ঘটনা খুলে বলে।
এদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার শিক্ষকের বিচারের দাবিতে জুতা ও ঝাটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। তারা জানান, এর আগেও একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট হাসিবুর রহমান হাসিব এ ধরনের অনৈতিক কাজ করেছেন। কিন্তু মানসম্মানের ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খোলেননি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই উত্তম কুমার মিত্র বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় শহীদ শেখ আবু নাসের দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট মো. হাসিবুর রহমান হাসিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মাকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতার মাদ্রাসা সুপারকে দুপুর ৩টার দিকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঐ ছাত্রী সোনাডাঙ্গা থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
মন্তব্য করুন