মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮ মে, ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

মাদারীপুরে স্কুলের টয়লেটে ৬ ঘন্টা আটকে থাকার পর ছাত্র উদ্ধার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

স্কুলের ক্লাশ ছুটির পর সবাই বাড়ি গেলেও বিদ্যালয়ের বাথরুমে আটকা পড়ায় ফিরতে পারেনি প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্র। দীর্ঘ ৬ ঘন্টা বাথরুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পরে অবশেষে রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় সন্ধ্যা ৬ টায় বের হয়ে আসে ওই শিশু।
বৃহস্পতিবার (১৬মে) মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী ও ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে মো. রাফিন। তিনি ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী। প্রতিদিনের মতন বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিল রাফিন। তখন তাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর টয়লেটে যায় শিশুটি। পরে দপ্তরি খোকন খান টয়লেট চেক না করেই বাহির থেকে রশি দিয়ে আটকিয়ে দেন। পরে শিশুটি দরজাটি খোলার জন্য ডাক চিকিৎসার করলেও কোন সাড়া মেলেনি। এ সময় বারবার দরজা খোলার জন্য ডাক চিৎকার করে। পরে প্রায় ছয় ঘন্টা পর শিশুটি দরজা ধাক্কাধাক্কি করলে এক পর্যায় দরজার রশি ছিঁড়ে যায়। তখন টয়লেটের দরজাটি আটকে পড়া শিশু খুলতে সক্ষম হয়। এদিকে ছুটির পর শিশুটি হাজী নোয়াব আলী খান শিশু নিবাসে না ফেরায় শিশু নিবাসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ছাত্র ও আত্মীয়ের বাড়িতে খুঁজতে থাকেন। এদিকে সন্ধ্যা ৬টার পর বিদ্যালয়ের তিনতলা থেকে একটি মুদি দোকানদারকে বিদ্যালয়ের কেচিগেট খোলার কথা বলে অসুস্থ হয়ে পড়লে কয়েকজন মিলে শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে শিশুনিবাসে নিয়ে যায়।

এলাকাবাসী এ ঘটনাকে ১৯৮০ সালের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ছুটির ঘণ্টার সঙ্গে তুলনা করে এলাকাবাসী রাকিব হাসান বলেন, সেখানে ৬ ঘন্টা পর স্কুলের বাথরুম থেকে জীবিত উদ্ধার হলো ছাত্রটিকে। আর কিছু সময় হলেই ছুটির ঘন্টা বেজে যেত শিশুটির। খবরটি শুক্রবার (১৭ মে) জানাজানি হলে বিকেলে সরেজমিনে ওই ছাত্রের নিবাসে গেলে সে তার ভাষায় গতকালের ঘটনা বোঝানোর চেষ্টা করলেও শিশু নিবাসের পরিচালক বাতেন খান শিশুটির সাথে কথা বলতে বাধা প্রধান করেন। তবে এ কারণে শিশুটির বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিশু নিবাসের পাশের এক দোকানি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাথরুমের আটকা পড়ে রয়েছে। কোন মতেই  দরজা খুলে তিন তালার বেলকনি থেকে আমাদের ডাক দেয়। পরে আমরা তাকে গিয়ে উদ্ধার করি।

পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, ঐদিন আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। আমি স্কুল থেকে বের হবার আগ পর্যন্ত এমন কিছু নজরে পড়েনি। আমি পরে জানতে পেরেছি। বিষয়টির সাথে যারা জড়িত রয়েছে তদন্ত করা হবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনহত ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।
 

মন্তব্য করুন