ক্ষমতার অপব্যবহারে ভোটারদের হুমকি-ধমকির অভিযোগ

৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন তৃতীয় ধাপে জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু ও নানিয়ারচন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যে পাহাড়ে শুরু হয়েছে ম্যাডার ও খুন খারাপি দলাদলি এবং কাদা ছুড়াছুড়ি। বিশেষ করে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অস্বিস্ত টিকিয়ে রাখতে উপজেলা নির্বাচনও তাদের মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্য দিকে জেলার বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা নির্বাচন ঘিরে নানান গুনঞ্জন, প্রভাবশালীদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ভোটারদের প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা নির্বাচনে সাংবাদিক নামধারী পরিচয় বহন করে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে এমন অভিযোগও উঠে এসেছে।

এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাসায় গিয়ে দেখা করে আসছেন এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ভোটারদের অভিযোগ একজন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি নির্বাচন চলাকালিন সময়ে কেন কি জন্য প্রার্থীর বাসায় যাবে? এব্যাপারে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা ফোন রিসিভ করেনি।

অপরদিকে বাঘাইছড়ি ও লংগদুতে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল এবং জাল ভোট দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা চলছে। লংগদু ও বাঘাইছড়ি এই দুই উপজেলায় বেশ কিছু ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে ওইসব কেন্দ্রে জাল ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রার্থী এবং ভোটারা আশংকা করছে।

যদিও এই নির্বাচনে দলীয় হাই কমান্ড বা জেলা থেকে কোন প্রার্থীর ব্যাপারে র্নিদিষ্ট ইঙ্গিত বা সরাসরি বলে দেওয়া হয়নি যে, তোমরা ওমককে ভোট দেবে। তারপরও শুনা যাচ্ছে অনেকে নির্বাচনে পেশী শক্তি ব্যবহার করছে। লংগদুতে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে চলছে প্রচুর কাদা ছুড়াছুড়ি। লংগদু উপজেলাধীন বগাচতর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল বশর প্রকাশ্যে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দেন এবং প্রয়োজনে দল থেকে বহিস্কারের হুমকি দেন। বশর চেয়ারম্যান সরাসরি নির্বাচন আচারণবিধি লংঙ্ঘন করেছেন। ভোটারা বলছে এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন নীরব।

লংগদু ও বাঘাইছড়ি ভোটারা বলছে, নির্বাচন আগামী ২৯ মে এখন থেকে যে পরিস্থিতি শুরু হয়েছে জানিনা আমরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারি কি না। যদিও নৌকা প্রতীক নাই তার পরও পক্ষ বিপক্ষ চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। লংগদুতে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে শক্ত অবস্থানে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল বারেক সরকার। দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

অপরদিকে বাঘাইছড়িতে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং জেএসএস সংস্কার নেতা সুদর্শন চাকমা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অলিভ চাকমা প্রতিদ্বদ্ধীতা করছেন। ভোটারা বলছেন দু’জনের অবস্থানই ভাল। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভাগ্য নির্ধারন করবে আগামী ২৯ মে। দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মোশারফ হোসেন খান ও পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বিপিএম বার বলেন, সুষ্ঠু,অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এই নির্বাচনে কোন কেন্দ্রে জাল ভোট ,কেন্দ্র দখল এবং নূন্যতম কোন ধরনের ঝামেলা হলে সাথে সাথে ওই কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে। নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাথে সাথে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনে কাউকে চুল পরিমান ছাড় দেওয়া হবেনা। নির্বাচনে অসংখ্য পুলিশ, বিজিবি,আনসার, ভিডিপি ও র‌্যাব মোতায়ন করা হবে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে প্রত্যেকটি কেন্দ্র।