
প্রকাশিত: ২৮ মে, ২০২৪, ১১:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে আছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজন। অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা রোগী ও লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। তারা বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শজিমেক) সামনে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকে। এ অবস্থায় রোগীদের আসা-যাওয়ার জন্য অটোরিকশা ও ইজিবাইক ছিল বিকল্প ভরসা।
আন্দোলনকারী চালকদের অভিযোগ, হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং রাখায় অন্তত ২০জন চালককে মারধর করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক রোগীকে অক্সিজেনসহ নামানোর সময় অ্যাম্বুলেন্স চালকদের মারধর করেন হাসপাতালের পরিচালক। এরপর হাতকড়া পড়িয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আটক রেখে ট্রাফিক আইনে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়।
এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি দাবি করেন, কাউকে মারধর ও আটকের ঘটনা ঘটেনি। জেনেছি একটি অ্যাম্বুলেন্সের ফিটনেস না থাকায় ট্রাফিক আইনে জরিমানা করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের হাসপাতাল চত্বরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জটলা পাকানোর সুযোগ নেই। তারা রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে৷
অ্যাম্বুলেন্স চালকদের তিনদফা দাবির মধ্যে রয়েছে- হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের রোগী পরিবহনের সুবিধা দেওয়া, হাসপাতালের ভেতরে বৈধ অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং সুবিধা দেওয়াসহ চালকদের মারধরের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি।
ধর্মঘট চলাকালে আরিফ হোসেন নামের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক দাবি করেন, তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন। জরুরি বিভাগে রোগী নামানোর সময় কিছুটা দেরি হওয়ায় হাসপাতালের পরিচালক কোনো কিছু না শুনেই দুইজনকে মারধর করেন। তার নির্দেশেই পুলিশ হাতকড়া পড়িয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে আটক রাখে। পরে ট্রাফিক আইনে দেড় হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।
হাসপাতালের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আমরা রোগী পরিবহনের জরুরি সেবায় কাজ করে থাকি। আমাদের কেন মারধর ও হেনস্তা করা হবে। হাসপাতালের পরিচালক আমাদের কেন মারধর করে হতকড়া পড়িয়ে পুলিশের হাতে দেবেন। আমরা তো দাগী আসামি নই।
অ্যাম্বুলেন্স চালকরা জানান, হাসপাতালে প্রায় ৪০টি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রোগী ও মরদেহ পরিবহন করে। হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং থাকায় শজিমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলম চালকদের মারধর ও গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে দেন। তাদের দাবি, হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং রাখায় গত তিনমাসে অন্তত ২০জন চালককে মারধর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলমের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের বাইরের কিছু অ্যাম্বুলেন্স না চললেও সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
মন্তব্য করুন