আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৪, ১২:০১ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

আগৈলঝাড়ায় ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পরিবারের অসচেতনতায় বাল্য বিয়ে দেয়া পঞ্চম শ্রেণির স্কুলছাত্রী স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসায় ওই শিশু ছাত্রীকে বাবার পরিবারের লোকজন শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রবিবার বিকেলে সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয়ে শর্ত সাপেক্ষ শিক্ষার্থীকে তার বাবা মায়ের জিম্মায় প্রদান করা হয়েছে।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের জামাল হাওলাদারের মেয়ে, স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা আক্তারের সাথে দুই মাস আগে একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে সাজিদ মোল্লার সাথে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে শিশুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হয়। পুতুল খেলার বয়সের ওই শিশু শিক্ষার্থী বিয়ের পর স্বামীর সংসারে গিয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্বামী ও তার পরিবার সদস্যদের নির্যাতন সইতে না পেরে শনিবার সকালে বাবার বাড়ি পালিয়ে আসে।

স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসার কারণে হাবিবার বাবা জামাল, মা মারুফা বেগম, দুলাভাই আল আমিন আকন শিশু হাবিবাকে ঘরের খুঁটির সাথে শিকলে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।

স্কুলছাত্রী হাবিবার মা মারুফা বেগম সমাজসেবা অফিসে বসে জানিয়েছেন- তারা হতদরিদ্র পরিবারের হওয়ায় মেয়ের লেখাপড়া করাতে কস্ট হওয়ায় তাকে বিয়ে দিয়েছিল। স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসায় এবং সেখানে ফিরে যেতে না চাওয়ায় তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

ঘটনাস্থল পরিদর্শণকারী থানার উপ-পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে শিশু নির্যাতনের মৌখিক খবর পেয়ে শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়ন। অভিযোগের ঘরটি ঘরটিও তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। ঘটনায় থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও প্রবেশন অফিসার সুশান্ত বালা জানান, তিনি ঘটনা শুনে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বরদের মাধ্যমে ওই শিশু শিক্ষার্থী ও তার পরিবার সদস্যসহ স্থানীয়দের তার কার্যালয়ে ডেকে আনেন। রবিবার বিকেলে তার কার্যালয়ে বসে হাবিবার পিতা-মাতার কাছ থেকে ওই মেয়ের বয়স ১৮বছর না হওয়া পর্যন্ত তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর বাড়িতে পাঠাতে পারবে না, স্বামীও মেয়ের বাড়িতে আসতে পারবে না।

মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করতে পারবে না এবং কোন ভাবেই তার উপর অত্যাচার নির্যাতন করা যাবে না। এছাড়াও কর্মকর্তার দেয়া বিভিন্ন শর্ত মেনে মুচলেকা দিয়ে শিশুর পরিবার মুচলেকা দিয়ে হাবিবাকে তাদের সাথে নিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন