রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই, ২০২৪, ০২:২৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সরকারের বদনাম হলেও দুর্নীতিবাজরা ছাড় পাবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা আবারও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের বদনাম হলেও দুর্নীতিবাজরা ছাড় পাবে না। 

তিনি বলেন, সরকারের বদনাম নিয়ে ভাবি না, দুর্নীতি যেই করুক ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে মন্ত্রণালয়/বিভাগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এ্পিএ) স্বাক্ষর এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চক্তি ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নই আমাদের লক্ষ্য৷ দুঃখ লাগে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েরাও 'রাজাকার' স্লোগান দিচ্ছেন৷ তারা কী ৭১ এ হলের ইতিহাস জানেন?

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নই আমাদের লক্ষ্য৷ দুঃখ লাগে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েরাও শুনি 'তারা রাজাকার' স্লোগান দিচ্ছেন৷ তারা কী ৭১ এ এ হলের ইতিহাস জানেন? শিক্ষার্থীরা কী জানেন, কী পাশবিক নির্যাতন পাকিস্তানি হানাদাররা রোকেয়া হলেই করেছিল! রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতো সে সময়৷ এসব শিক্ষার্থীরা সেসব দেখেননি৷ কী শিক্ষা তারা নিলো...আসলে এসব জানেনা বলেই শিক্ষার্থীরা, নিজেদের রাজাকার বলতে লজ্জা পাচ্ছে না৷

তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ যেমন গড়তে চাই, তেমনি কর্মকর্তাদের এ দিকটাও দেখতে হবে৷  যেখানে অনিয়ম হবে আপনারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন৷ সমাজটাকে আরও শুদ্ধ করতেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না সরকার৷ যে যেখানে যাই করুক না কেন, দুর্নীতির দায় চাপানো হয় সরকারের ওপর৷ তবে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান মানে প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে৷

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে করে শেখ হাসিনা বলেন,  প্রত্যেকের ওপর যা যা দায়িত্ব আছে, তা পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে কর্মকর্তাদের৷  পরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে৷ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে সরকার অনেক দূর এগোতে পেরেছে৷ সরকারের কাজগুলোতে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তো বটেই, জাতির পিতার মেয়ে হিসেবেও বলছি, দেশবাসীর কষ্টলাঘব করাই আমাদের লক্ষ্য।

 
সব মন্ত্রণালয়ে নিচের দিকেও যাতে দুর্নীতি-অনিয়ম না হয়, সেটি নজরদারিতে রাখতে হবে কর্মকর্তাদের৷ সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে পারলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে৷ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এটি সরকারি কাজে গতিশীলতার পাশাপাশি আস্থা তৈরি হয় মানুষের মাঝে৷ পাশাপশি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
 
কেউ যেন চক্রান্ত করে খাদ্যের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য নজরদারি ও তদারকি বজায় রাখতে হবে-এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও নজরদারি জরুরি৷  এবার আবার বন্যা হতে পারে৷ টানা খরায় হিমালয়ের বরফ গলেছে বেশি৷ এবার বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে৷ তা মোকাবিলার প্রস্তুতি এখন থেকেই থাকতে হবে, যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়৷ 

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর টানবে না সরকার, সেগুলো নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে৷ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পত্র-পত্রিকায় কী লিখলো, তা দেখে কাজ করবেন না, ঘাবড়ে যাবেন না৷ বিবেক ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যাবেন৷ তবে খোঁজ নেবেন অভিযোগটি সত্য কিনা৷ মাটি-মানুষের রাজনীতি করেই আজকের অবস্থানে এসেছে আওয়ামী লীগ সরকার৷

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের নিচ দিকেও অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। এজন্য নজরদারি রাখতে হবে। সরকারি কাজে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে পুরস্কৃত করা হবে।

মন্তব্য করুন