
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই, ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনা। সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ফাজিল আকন্দের বিধবা স্ত্রী পচি বেওয়াকে স্থানীয় কয়েকজন রাজাকার হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেন। এরপর সেখানে হানাদার বাহিনীর সেনাদের কাছে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন । এরপরে মেরিনা খাতুনের জন্ম হয়।
২০২২ সালে ৮ সেপ্টেম্বর বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেওয়ার মেয়ে মেরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন পাঠান।
আবেদনে মেরিনা খাতুন উল্লেখ করেন, তার মা পচি বেওয়াকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান।
গত ২৫ এপ্রিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮৯তম সভায় মেরিনা খাতুনকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা জামুকার উপ-পরিচালক (উন্নয়ন) প্রথম রঞ্জন ঘটক গত ৭ জুলাই স্বাক্ষরিত পত্র প্রদানের মাধ্যমে মেরিনা খাতুনকে অবহিত করেন।
দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) থেকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পাশবিক নির্যাতনের ফলে জন্ম নেওয়া মেরিনা খাতুন।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুন নিজেই।
এর ফলে এখন থেকে তিনি বাবার পরিচয় ছাড়াই সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পাবেন। তবে স্বীকৃতিকে সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে পেলেও ভাতা না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। মেরিনার দাবি, ভাতা সুবিধা পেলে পরিবার নিয়ে একটু ভালোভাবে চলতে পারবেন তিনি।
মেরিনা খাতুন বলেন, ‘আমি স্বীকৃতির চিঠি পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এই স্বীকৃতি পেতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও যেসব সংবাদকর্মী আমার পাশে ছিলেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। অনেক চেষ্টার পরে স্বীকৃতি পেলেও ভাতা পাইনি। আমার দাবি অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মতো আমাকেও ভাতা ও সব সুবিধা দেওয়া হোক।’
তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কামান্ডার আরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনা খাতুন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি মেরিনাকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মানি ও ভাতা দেওয়ারও দাবি জানাই।
মন্তব্য করুন