
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সোমবার বিকালে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক গণঅধিকার পরিষদের একাংশেরসঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘‘ তাদের(কাটা আন্দোলনকারীরা)দাবি নিয়ে তারা সফলভাবে আন্দোলন করেছে। আমি মনে করি যারা আন্দোলন করছে তাদের পরিবার আছে, তাদের আত্বীয় স্বজন, বহু লোক আছে। সকলে কিন্তু আজকে একটা ন্যায়সঙ্গত সমাধান খোঁজারঅপেক্ষা করছে। ‘সেটা না করে যদি আপনি লাঠিপেটা করেন,আপনি মিথ্যা মামলা দেন তাহলে তো সেটা সেটার সমাধান পাবার সুযোগ নেই। আমরা কোটা আন্দোলনকারীদেরওপরে ছাত্রলীগের যে হামলা, তাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি ।
আমীর খসরু বলেন, ‘‘দেশটা তো কোনো গোষ্ঠিরহতে পারে না। আজকে তাদের প্রতিবাদ তো গোষ্ঠির বিরুদ্ধে, দেশ তো গোষ্ঠির হতে পারে না,দেশ সকলের জন্য।
‘রাজাকার রাজাকার’ শ্লোগানের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘‘ওরা (আন্দোলনকারীরা) বলছে, ‘চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’। আপনি যখন অধিকার চাইবেন, কেউ কেউ বলে ষড়যন্ত্র করছে, কেউ কেউ বলে বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে, কেউ কেউ বলে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি, কেউ কেউ বলে রাজাকার, এ সমস্ত কথা বলে এ গুলোকে মূলধন করে অনেকদিন জাতিকে তাদের সমস্ত অধিকারথেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এগুলোকে আর মূলধন করার সুযোগ নাই। নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলোর গ্রহনযোগ্য কিছু নাই তারা সেটাই বলছে, নতুন প্রজন্ম সেটাবুঝাবার চেষ্টা করছে। এসবকে মূলধন করে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার কারো নেই। নতুন প্রজন্মসেই বক্তব্যটাই দিচ্ছে, সেজন্য তারা আন্দোলন করছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তারা কি শ্লোগান দিয়েছে? ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচারস্বৈরাচার। আন্দোলনকারীদের এটা শ্লোগান। রাজাকার রাজাকার পর্যন্ত বলে অর্ধেক শ্লোগানদিলে হবে না, শ্লোগানটা পুরোটা বলতে হবে। পুরো শ্লোগানটা যদি মাথায় রেখে আমারমনে কেউ কোনো সমস্যা দেখতে পারছে না। আরো শ্লোগান আছে আমি সেটা এখানে বলতে চাচ্ছি না।
কেনো হচ্ছে এরকম প্রশ্ন করা হলে আমীরখসরু বলেন, ‘‘এটা কোটা আন্দোলনকারীদের নিজস্ব দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে। এটা বাংলাদেশেরমুক্তির আন্দোলন নয়। ‘কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে গণতান্ত্রিকসরকার না থাকার কারণে, অবৈধ দখলদার একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তাদের সমস্ত অধিকারকেড়ে নিয়ে সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা জনগনের কাছে দায়বদ্ধ না তারা জনগনেরকাছে জবাবদিহি না, এটাই মূল সমস্যা।” না হলে যদি জনগনের কাছে জবাবদিহি একটা নির্বাচিতসরকার থাকতো এটার যৌক্তিক সমাধান খুবই সহজ।
তিনি বলেন, ‘‘এই যৌক্তিক সমাধান হচ্ছে এই দেশে আগামী দিনে কি একটা মেধাভিত্তিক দেশ গড়তে চান না মেধাহীন দেশ গড়তে চান। আপনিকি দলীয় লোকদের নিয়ে দেশ গড়তে চান না কি সকলকে নিয়ে দেশ গড়তে চান, আপনি কি একটা আইডেন্টিটিক্রাইসিস তৈরি করে দেশের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চান না কি জাতীয় ঐক্যমতে দেশটাগড়তে চান। বিভক্তি সৃষ্টি করে বিভিন্ন শ্লোগানকে এখানে বলে, বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে পুরোজাতিকে বিভক্ত করে সেভাবে দেশ গড়তে চান না কি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ দেশ গড়তে চান, এটা আপনাকে ঠিক করতে হবে। দলটির সদস্য সচিব ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বৈঠকে যুগ্ম আহ্বায়ক এস ফাহিম, তারেক রহমান, আব্দুল্লাহ, ইমাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
দুই বৈঠকে আমীর খসরুর সাথে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহবুলুও ছিলেন। এরপর সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদের আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাটের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়। এই বৈঠকে ছিলেন, সাজ্জাদুররহমান রাফি, রিমন হোসেন, হামিদ ফিথু, তাওহীদুর ইসলাম, রাসেল হোসেন, মুহাম্মদ ইসহাকহাবিব ও হাসিবুর রহমান রাকিব। গত চার দিনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক বামগণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়বাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট এনডিএ, গণফোরাম, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, এলডিপি, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
মন্তব্য করুন