নানা অজুহাতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

এবার নতুন করে সরবরাহ ঘটতির অজুহাত। আর এই অজুহাতেই প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আর এর সঙ্গে ব্যবসায়ীরা আগের আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্যও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি তিন দিনের ব্যবধানে রাজধানী পাইকারী ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়ে ছিল কেজিতে ১০-২০ টাকা।

হঠাৎ করেই ঢাকার কাঁচাবাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক লাফে কেজিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগতে থাকা মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়লো।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে বাংলাদেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ভোক্তাদের জন্য নতুন অস্বস্তি ডেকে এনেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ- সরবরাহ সংকট, আমদানি ও ফলন কমে যাওয়া। সরকারি কর্মকর্তারাও তাই বলছেন।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকার খুচরা বিক্রেতা জুয়েল মিয়া বলেন, দেড় মাস ধরে পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। তারা গতকাল দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২৫ টাকায় বিক্রি করেছেন।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) আজকের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।

টিসিবি বলছে, গত মাসে দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত মাস থেকে এ পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ৪১ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

এদিকে আগের আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। কিন্তু গতকাল দাম বেড়ে হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।

টিসিবি বলছে, এক মাসের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ এবং এক বছরে ব্যবধানে বেড়েছে ১৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, এ বছর দেশে ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, যা চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আরও ছয় থেকে সাত লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। কারণ দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণ সুবিধার অভাব আছে, এতে উৎপাদিত পেঁয়াজের কিছু অংশ নষ্ট হয়।

তবে এবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পাশাপাশি অপরিপক্ব ফসল তোলার কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমানের তুলনায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ উৎপাদন কমেছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। মার্চে দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়, তারপর আবার কিছুটা কমলেও এপ্রিল থেকে বাড়তে শুরু করে। গত মাসে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পেঁয়াজের দাম ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় উঠেছিল।