পান খাওয়ার পর আর কিছু মনে নেই, বললেন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমার সন্ধান মিলেছে নারায়ণগঞ্জ কাচপুরে। নিখোঁজের প্রায় ৪২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নারায়ণগঞ্জের হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে গিয়ে সাহায্য চান। এ সময় প্রীতি খন্দকার  অপহরণ ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেল সাড়ে ৪ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রীতি খন্দকার হালিমা কাচপুরে অবস্থান করছেন বলে জানায় তার স্বামী মাসুদ খন্দকার।  

বিকেল ৫ টার দিকে স্বামীসহ তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে বিজয়নগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। বিজয়নগর থানা পুলিশও রয়েছে তাদের সঙ্গে।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রীতি খন্দকারের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি তারা সকালে শুনতে পান। পরে নারায়ণগঞ্জে পুলিশ পাঠানো হয়। কি হয়ে বা কি ঘটেছে  প্রীতি খন্দকারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানা যাবে।

প্রীতি খন্দকার জানান, গত ২৮ মে মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে বিজয়নগরের হরষপুর  ঋষি পাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় দুই নারী এসে মাদরাসায় যাওয়ার কথা বলেন। তখন তাকে একটি পান খেতে দেওয়া হয়।

পান খাওয়ার পর থেকেই কি হয়েছে বা হয়েছিল কিছুই মনে নেই।’

প্রীতি খন্দকারের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে একটি কালো গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি আশে পাশে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন এটি নারায়ণগঞ্জ। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতা চান। পুলিশের মাধ্যমে প্রীতি তার স্বামী মাসুদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

প্রীতি খন্দকারের স্বামী মাসুদ খন্দকার অভিযোগ করেন, অপহরণ করার পর তার স্ত্রীকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। অপহরণকারীরা তার পরিবার সম্পর্কে সবকিছু জানে।

তিনি বলেন, তারা (অপহরণকারীরা) প্রীতির কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণের গয়না নিয়ে গাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলে তাকে।

পুলিশের সহায়তায় প্রীতি রক্ষা পেয়েছেন। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হচ্ছে।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার উদ্ধারের আগে  মাসুদ খন্দকার অভিযোগ করেছিলেন, আসছে ৫ জুন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তার স্ত্রী মহিলা  ভাইস চেয়ারম্যান পদে (পদ্মফুল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। 

এর আগে সার্ভার ত্রুটির কারণে প্রীতির মনোনয়ন পত্র  জমা দিতে সমস্যা হওয়ার কারণে  হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পান প্রীতি। 

গত ২৮ মে  মঙ্গলবার দুপুরে হরষপুর ইউনিয়নে দুইজন মহিলা সহযোগী নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যান প্রীতি। হরষপুরের ঋষি পাড়ায় ঢুকে প্রচার চালানোর সময় তিনি একটি বাড়ির ভেতরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। মিনিট বিশেক পার হলেও বের হচ্ছে না বিধায় সঙ্গে থাকা দুজন নারী ভেতরে যান। সেখানে গিয়ে তাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তা মাহবুবুল হক সহ  বিজয়নগর থানার ওসি আসাদুল ইসলাম কে অবগত করা হয়। 

পরে তিনি ২৯ মে বুধবার  এ বিষয়ে থনায় জিডি করেন। স্ত্রীকে গুম করা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি মৌখিকভাকে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে জানান, ওই নারী নিজেই এসে পুলিশের সহায়তা চায়। নিজেকে বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বলে পরিচয় দেন। এরপর বিষয়টি পরিবারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়।