পিতা-পূত্রের গবাদিপশুর ঔষধ তৈরির ভেজাল কারখানা

রাজধানীর শ্যামপুরের পশ্চিম ধোলাইপাড়ের সাবান ফ্যাক্টরি গলির একটি বাসা থেকে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও খাবারের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি সংক্রান্ত ভেজাল ওষুধের বড় একটি কারখানা আবিস্কার করে বাপ ছেলেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো পিতা আব্দুল গাফফার, ছেলে তানভীর ও কর্মচারী নাঈমুজ্জামান।

আজ শনিবার ডিএমপির গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) রূপালী বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের হাজারো হাজারো প্লাস্টিকের বোতল, স্টিকার, ড্রাম ভর্তি বিভিন্ন কেমিক্যাল, পাউডার, বস্তা ভর্তি সোডিয়াম লবণ, বালতি, মগ ও স্প্রে উদ্ধার হয়েছে।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ইউরো সাইন্স ফার্মা নামক কোম্পানির ব্যানারে ওয়ারী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে অনলাইনে এবং অফলাইনে জমকালো বিজ্ঞাপন দিয়ে লোক নিয়োগ এবং গবাদি পশুর ঔষধ এবং ফুড সাপ্লিমেন্ট পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় করছিলো। বিজ্ঞাপনে তারা প্রচার করে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ভেটেরিনারি ঔষধ বাজারজাতকরণ করে থাকে এবং এ উদ্দেশ্যে অভিজ্ঞ ডিস্ট্রিবিউটর/বিক্রয় প্রতিনিধি দরকার।

উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, গবাদি পশুর ঔষধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করতে থাকা এই কোম্পানিটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে গবাদি পশুর জন্য রুচি বর্ধক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসা পত্রের জন্য সিরাপ এবং ট্যাবলেট ইত্যাদি আমদানি করার কথা অফলাইনে অনলাইনে প্রচার করে বেড়ালেও তারা মূলত চকবাজার ও মিটফোর্ড এলাকা থেকে বিভিন্ন রকম ছাই, ভস্ম, জেল এবং রঙ ইত্যাদি ক্রয় করে। চকবাজার থেকে কেজি ধরে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে। তারপরে ফকিরাপুলের বিভিন্ন প্রিন্টিং প্রেস থেকে বিদেশী হলোগ্রাম ও স্টিকার বানিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে সেটে দেয় আর এভাবেই তৈরি করে ফেলে গবাদিপশুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঔষধ।

গবাদিপশু এই ঔষধ মিশ্রিত খাবার দানবের মতো খেলেও তা গবাদি পশুগুলোর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষের জন্য পরবর্তীতে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ সংক্রান্তে শ্যামপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা এই পুলিশ কর্মকর্তা।