
প্রকাশিত: ১১ জুন, ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাদক উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ। হামলায় ডিবি পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের চরদিয়াড় এলাকায় পুলিশের ওপর মাদক
ব্যবসায়ীদের হামলার এ ঘটনা ঘটে। হামলা ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দৌলতপুর থানায় পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে। হামলার মামলায় স্থানীয় এমপি’র দুই ভাতিজা সহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন গভীর রাতে চড়দিয়ার এলাকায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল মাদক বিরোধী অভিযান চালায়। এসময় ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ জুয়েল রানা নামে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। এ খবর মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে উদ্ধার করা মাদক ও আসামীকে ছিনিয়ে নিতে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ৩ পুলিশ সদস্যকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বেধড়ক মারপিট করে আহত করে। খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও দৌলতপুর থানা পুলিশ সোমবার ভোররাতে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় জেলা গয়েন্দা পুলিশের এস আই জাহিদুজ্জামান জাহিদ, কনষ্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ও কামরুল ইসলাম কে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশের ওপর হামলা ও আটকে রেখে মারপিটের ঘটনায় সোমবার (১০ জুন) রাতে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর দুই ভাতিজা উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাকুন্ডি গ্রামের মৃত রবিউল চৌধুরীর ছেলে তুষন চৌধুরী (৩২) ও মিন্টু চৌধুরীর ছেলে আরজু চৌধুরী (২৫) সহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই আলহাজ আলী। মাদক উদ্ধার ও আটকের ঘটনায় আরো একটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পৃথক মামলায় উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি আশ্রয়ন এলাকার আব্দুল লতিফ দফাদারের ছেলে জুয়েল রানা (২১) ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একই ইউনিয়ন চড়দিয়াড় এলাকার ছামিউল লস্করের ছেলে রনি ইসলাম (২২) ও মো. মান্না লস্কর (২০) এবং
মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার মাহমুদ রাজিব (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, হামলা ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাঁকী আসামীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
এবিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, দৌলতপুর থানায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়েছে। মামলার ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের ওপর হামলার বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, আমাদের ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় এমপি ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের দুই ভাতিজা পুলিশের ওপর হামলা মামলার আসামি হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি খবরটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
মন্তব্য করুন