
প্রকাশিত: ২৩ জুন, ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বিজয়নগরে ৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মো: ইয়াসিন মিয়া (৩৮) নামের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছে আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ । শনিবার (২২ জুন) বিকাল ৫ টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে তার নিজ বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ ইয়াসিনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চানপুর মধ্যপাড়ার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মো: ইয়াসিন মিয়া (৩৮)। আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ (IC) মো: মফিজের দিক নির্দেশনায় এএসআই ইউসুফ গাজীর নেতৃত্বে মাদক প্রতিরোধের নিয়মিত অভিযান পরিচালনাকালে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় আসামি মো: ইয়াসিনের বসত বাড়িতে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে । এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনায় তার ঘর তল্লাশি করেলে তার খাটের তষুকের নিচে থেকে একটি নিল রংয়ের প্যাকেট থেকে মোট ৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো: মফিজ আরও জানায়, আটককৃত আসামির বিরুদ্ধে বিজয়নগর থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা প্রক্রিয়ায়ধীন রয়েছে।
মাদক ব্যবসার আড়ালে চোরাইমালের ডিলারশীপ ইয়াসিনের :
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় মো: ইয়াসিন গত ১৫ বছর যাবৎ মাদক ব্যবসা করে আসছেন। একাদিকবার হাতে নাতে মাদকসহ আটক হয়ে জেল ও খেটেছেন। মো: ইয়াসিন মাদক ব্যবসার পাশাপাশি চুরাই মালামাল ও কেনেন। গেল ১ বছরে একাদিকবার চোরাই মালামাল কেনার দায়ে সামাজিকভাবে শালিস ও হয়েছে।
চোরাই মালামাল কেনার প্রসঙ্গে আউলিয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে একাদিক অভিযোগ থাকায় পুলিশ তার বাড়ি থেকে চোরাই মালামাল উদ্ধার করেন।
পাহাড়পুর ইউনিয়নের কামাল মুড়া গ্রামের মো: মজনু বলেন, গত ৭ মাস আগে আমার অটো রিকশার ব্যাটারি চুরি হয় এবং প্রায় ১ সাপ্তাহ পর আমি খবর পাই ইয়াসিনের বাড়িতে আমার গাড়ির ব্যাটারিটি রয়েছে। পরবর্তীতে আমি আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করলে পুলিশ আমার ব্যাটারির কাগজ পত্র যাচাই করে ব্যাটারিটি উদ্ধার করেন পুলিশ।
একই ইউনিয়নের খাটিংগা গ্রাম ও চানপুর, মকুন্দুপুর, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের চোরাই মালামাল উদ্ধারের অভিযোগে মো: ইয়াসিনের বাড়ি থেকে মালামাল গুলো উদ্ধার করা হয়। ব্যাটারি, বিভিন্ন গাড়ির চাকা,মোবাইল, রড, অন্যের জমি থেকে ফলজ চারা গাছ তুলে এনে নিজের জমিতে লাগান। এমন আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে ইয়াসিনের।
গত ১৬ জুন চানপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মো: আব্দুল বাছিরের বাড়ি ও সাংবাদিক মো: বাবুল মিয়ার বাবার ফোন চুরি হয়। এবং ইয়াসিনের সহকারি ও মাদক পাচারের সহযোগী মো: জাকারিয়াকে চুরি করার সময় দেখেছেন তারা। আব্দুল বাছিরের বাড়িতে কোনো পুরুষ না থাকায় সাথে সাথে তাদের আটকানো সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে জাকারিয়াকে ইয়াসিনের বাড়ি থেকে ধরে আনেন শিউলি আক্তার, নিপা আক্তার, সুমা আক্তার, ও আশা মনি চার বোন। ধরে আনার পর ইয়াসিনের সহযোগী জাকারিয়া স্বীকারোক্তি দেন যে সে ইয়াসিনের নির্দেশনায় কাজ করেন এবং ৩ টি মোবাইল ফোন জাকারিয়া নিজেই চুরি করে নিয়ে ইয়াসিনের কাছে দেয়। বিনিময়ে ইয়াসিন জাকারিয়াকে ২৫০০ টাকা ও ২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দেয়।
জাকারিয়া বলেন, ইয়াসিন চোরাই মোবাইল অবৈধভাবে ভারতে পাচার করেন। এবং যত ধরনের চোরাই মালামাল আছে সব গুলো ইয়াসিনের কাছে নিয়ে আসলে অল্প দামে ক্রয় করেন।
জাকারিয়া আরো বলেন, জাকারিয়া যদি কারো কাছে স্বীকার করেন জাকারিয়াকে মেরে কেটে ট্যাংকের ভিতরে ফেলে দেবেন।
এই বিষয়ে চানপুর গ্রামের সম্মানিত ব্যক্তি ও মুরুব্বিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সামাজিক ভাবে একাদিকবার সালিশ হয়েছে ইয়াসিনকে এই অবৈধ কাজ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো লাভ হয়নি। উল্টো সমাজের মানুষকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং ইয়াসিন ও ইয়াসিনের ছেলে সোহাগ জোর গলায় বলে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে যে তাদের কাজে বাধা দিবে।
পুলিশ জানায়, মাদক, জুয়া, চুরি, ডাকাতি, অবৈধ সকল কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন