আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ৭ মে, ২০২৪, ০৩:৩৪ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস

ছবি সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিতে রাজি হয়েছে হামাস।

গাজার শাসক দল হামাসের নেতৃত্ব পর্যায়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি বলে সোমবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার ব্যাপারটি এরই মধ্যে কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততাকারীদের জানানো হয়েছে বলে হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

তবে এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলছে না হামাস, এ ছাড়া জিম্মিদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত তা নিয়েও কোনো তথ্য জানা যাচ্ছে না। ইসরায়েলও এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

এর আগে মিশরের রাজধানী কায়রোতে বৈঠকে বসেছিল দু পক্ষ, তবে একটি চুক্তি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা জোরদার হওয়ার পরও তা ভেস্তে গেছে বলে জানায় নিউ ইয়র্ক টাইমস।

ওই প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে রোববার সর্বশেষ দফার আলোচনা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যা নিয়ে সমাধানে আসতে পারেনি কোনো পক্ষই। মধ্যস্থতাকারীরাও চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এ অবস্থাতেই হামাসের প্রতিনিধি দল কায়রোতে আলোচনা ত্যাগ করে।

হামাসের দুই সিনিয়র কর্মকর্তা এবং আলোচনায় অংশ নেয়া আরও দুজন কর্মকর্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তাও আলোচনা স্থগিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিষয়টিকে ‘সংকট’ বলে মন্তব্য করেন।

কায়রোতে বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার মানে হলো যুদ্ধের মধ্যেই থাকতে হবে গাজাবাসীদের। আর জিম্মিদের পরিবারগুলোকে তাদের প্রিয়জনের মুক্তির জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, আলোচনায় প্রধান বাধা ছিল যুদ্ধবিরতির সময়কাল। হামাস এটিকে স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছিল এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চেয়েছে সাময়িক বিরতি।

বেশ কিছুদিন ধরে ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে চলা যুদ্ধে বিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে আলোচনায় সামান্য অগ্রগতি হচ্ছিল। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে উভয় পক্ষ একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছায়।

হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু নেতানিয়াহুর সংকীর্ণ মানসিকতায় এই চুক্তি হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল এবং হামাস কয়েক দিন আগে একটি চুক্তির কাছাকাছি ছিল, কিন্তু রাফাহ সম্পর্কে নেতানিয়াহুর বক্তব্য হামাসকে তার দাবিগুলো কঠোর করতে বাধ্য করেছিল যাতে; ইসরায়েলি বাহিনী জয়ী হয়।

এর আগে রোববার বিবিসি জানায়, হামাসের একটি প্রতিনিধিদল এ আলোচনায় অংশ নিতে শনিবার কায়রো যায়। আলোচনায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে এ পর্যন্ত সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছায় তারা। হামাস প্রতিনিধিদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যায়।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস বলেছিল, তারা ফিলিস্তিনিদের দাবি পূরণে একটি চুক্তি সুরক্ষিত করতে বদ্ধপরিকর, তবে প্রস্তাবে এখনও এমন কিছু রয়েছে, যাতে তারা একমত হতে পারছেন না।

হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতির এমন কোনো প্রস্তাবে রাজি হবে না যেখানে যুদ্ধের সম্পূর্ণ সমাপ্তির কথা উল্লেখ নেই।

এ আলোচনায় অংশ নিতে কায়রো সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। চুক্তি না হওয়ার জন্য হামাসকে দায়ী করে তিনি বলেন, গাজার জনগণ এবং যুদ্ধবিরতির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একমাত্র বাধা হলো হামাস। কয়েক মাস ধরেই যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে, কিন্তু নভেম্বরের পর কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি। এমনকি কোনো জিম্মিও মুক্তি পাননি।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি সামরিক হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৭ হাজার ৯০৮ জন আহত হয়েছেন। আর হামাসের হামলায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি

মন্তব্য করুন