প্রকাশিত: ১৮ ঘন্টা আগে, ০৩:২২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

শ্রীপুরে আন্তঃজেলা ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার

 

শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি:

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় একটি পাইপ কারখানায় ডাকাতির সময় পুলিশ ও স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে আটক করেছে।

গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের পিপিএস পাইপ এন্ড প্লাস্টিক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, ৯ থেকে ১০ জনের ডাকাত দল একটি ট্রাক নিয়ে ওই কারখানায় ডাকাতি করতে যায়। ৩-৪ ডাকাত ট্রাক নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করে। বাকী ৬ ডাকাত কারখানার গেইট টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরী মকুবল হোসেনকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ফেলে রাখে। কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসলামী ব্যাংক লি: এর কমকর্তা মো. আ. ছালাম ৩ তলা থেকে ডাকাতির ঘটনা দেখতে পান। তিনি কারখানার কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয় লোকদের ডাকাতির কথা জানান। স্থানীয়রা এসে পড়লে ডাকাতরা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। পুলিশ এসে স্থানীয়দের নিয়ে ধাওয়া করে ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা হলো ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ভাঘটিয়া গ্রামের ইদ্রীস আলীর ছেলে মো. সোহেল মিয়া(৩২), একই জেলার তারাকান্দা থানার ইসমাইলের ছেলে এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার কামুলা গ্রামের সোহরাবের ছেলে ফারুক (৩২), নওগা জেলার রাণীনগর থানার রাজাপুর গ্রামের মো. আলমের ছেলে আরিফ (৩০), নরসীংদি জেলার মাধবদি থানার বালুর মাঠ এলাকার সাহা আলমের ছেলে শিমান্ত (২১) ও চাঁদপুর জেলার মতলবপুর গ্রামের গোদা মোল্লার ছেলে ইব্রাহীম (২৩)।    

স্থানীয়রা জানান, কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রাত পৌনে ১১টার দিকে কয়েকজন অপরিচিত লোক গেইট টপকে ওই কারখানার ভেতরে ডুকে। বিষয়টি জেনে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে কারখানার ভেতেরে প্রবেশ করেন। তারা দেখতে পান ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে ডাকাতি শুরু করেছে। স্থানীয়দেরকে দেখে ডাকাতরা কারখানার পেছন দিক দিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়রা ধাওয়া করে ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষমান বাকী ৩-৪ ডাকাত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ডাকাতদের গণধোলাই দেন। আহত ৬ ডাকাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মকবুল হোসেন জানান, অপরিচিত কিছু লোক গেইটের ওপর দিয়ে ভেতরে ডুকে আমার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। আমাকে ফেলে রেখে তারা ডাকাতি করতে শুরু করে। লোকজন চলে এলে ডাকাতরা সীমানা দেয়াল টপকে বাহিরে চলে যায়।

 ইসলামী ব্যাংক লি: এর দায়ীত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আ. ছালাম জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে ৩ তলা থেকে দেখতে পান নিরাপত্তা প্রহরীকে কারা যেন মারছে। পরে বুঝতে পারেন কারখানায় ডাকাত ডুকেছে। তাৎক্ষনিক স্থনীয়দের, পুলিশ এবং কারখানার কর্তৃপক্ষকে জানান। দ্রুত সময়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশ এসে ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে চিকিৎসাক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, রাত ১২টার দিকে পুলিশ আহত ৬ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘ওই কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ডাকাতরা কারখানার যন্ত্রপাতি লুট করতে এসেছিল। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একাধিক টহল দল ঘটনা স্থলে পৌঁছাই। ডাকাতরা পালিয়ে যাবার সময় পুলিশ স্থানীয় জনতার সহায়তায় ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

মন্তব্য করুন