প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে, ০৪:৫০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সরকারি কোড নেই, লোকবল কম—তবুও এগিয়ে চলছে নাগরপুর টিটিসি

 

জুয়েল রানা নাগরপুর (টাঙ্গাইল):

প্রতিনিধি:“দক্ষতা অর্জনে অগ্রগামী, নাগরপুর TTC” এই স্লোগানে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় অবস্থিত নাগরপুর টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (TTC) দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে অগ্রগামী হলেও সরকারি কোডের অভাব এবং লোকবল সংকট এর কার্যক্রমে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ সালের ২৮ জুলাই প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি সিলেবাসে থাকা প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোতে তরুণদেরকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তবে প্রশাসনিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলো এর সামর্থ্যকে সীমাবদ্ধ করছে।

প্রতিষ্ঠানটির অধীনে পাঁচটি প্রশিক্ষণ কোর্স চলছে, যা স্থানীয় যুবকদের জন্য আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার এক সুযোগ এনে দিয়েছে। কিন্তু সরকারি কোডের অভাব এবং লোকবল সংকট সেই অগ্রগতি কিছুটা বাধাগ্রস্ত করছে। এছাড়া PDO (Pre-Departure Orientation) প্রশিক্ষণও চালু থাকলেও, সরকারি কোড না থাকায় সরকারি বরাদ্দ ও রাজস্ব প্রশিক্ষণ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

চলমান প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো:

 নাগরপুর TTC-তে পাঁচটি প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে:

কম্পিউটার অপারেশন: ৩ মাস মেয়াদ, আসন ২৫, বয়সসীমা ১৮–৩৫ বছর, শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। 

গ্রাফিক ডিজাইন: ৩ মাস, আসন ২৫, বয়স ১৮–৩৫ বছর, এসএসসি পাস

টেইলরিং অ্যান্ড ড্রেস মেকিং: ৩ মাস, আসন ২৫, বয়স ১৮–৩৫ বছর, অষ্টম শ্রেণি পাস

ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স: ৩ মাস, আসন ২৫, বয়স ১৮–৩৫ বছর, অষ্টম শ্রেণি পাস

ড্রাইভিং: ৩ মাস, আসন ২৫, বয়স ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব, অষ্টম শ্রেণি পাস, দেশ–বিদেশে চালনার উপযোগী প্রশিক্ষণ

নাগরপুর TTC-তে বিদেশগামী কর্মীদের জন্য প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন প্রশিক্ষণ (PDO) রয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার আগে কর্মীদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দিক যেমন—আইন, সংস্কৃতি, নিরাপত্তা এবং আচরণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এটি বিদেশগামী কর্মীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি কোর্স।

যদিও নাগরপুর TTC-তে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে, তবুও সরকারি কোড এবং আইবিএস প্লাস রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে কেন্দ্রটি সরকারি বরাদ্দ পায়নি। এর ফলে এখানে রাজস্ব প্রশিক্ষণ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এই সমস্যা সমাধান হলে অনেক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও ব্যাপকভাবে চালানো সম্ভব হবে, এবং এলাকার তরুণরা আরও ভালোভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

এছাড়া, লোকবল সংকটও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষক ও সহকারী না থাকায় একাধিক কোর্স পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ছে। এর ফলে অনেক কোর্সের প্রশিক্ষণ শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় মান বজায় রাখা যাচ্ছে না।

এদিকে, প্রশিক্ষণ নিতে আসা প্রশিক্ষণার্থীরা এ প্রতিষ্ঠানটির প্রশংসা করছেন। একজন প্রশিক্ষণার্থী জানান,“আমি এখানে গ্রাফিক ডিজাইন কোর্সটি শেষ করেছি। এখন আমি ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করছি এবং পরিবারের উপার্জনে সাহায্য করতে পারছি। খুবই উপকারে এসেছে।”

 

এ বিষয়ে নাগরপুর TTC-এর কর্তৃপক্ষ জানায় “নাগরপুর TTC একদিকে এলাকার যুবসমাজকে দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করছে, অন্যদিকে লোকবল ও সরকারি কোডের অভাবে কার্যক্রমের বিস্তার নিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি, যেন দ্রুত সরকারি কোড প্রদান করা হয় এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়, যাতে আমরা আরও বেশি সংখ্যক প্রশিক্ষণার্থীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।” 

মন্তব্য করুন