প্রকাশিত: ২ জুন, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

হালদা পাড়ে চলছে ডিম ফোটানোর উৎসব



মো. একরামুল হক, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার হালদা নদীর পাড়ে চলছে ব্যস্ততম ডিম ফোটানোর কাজ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মা মাছ ডিম ছাড়ার পর টানা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে ডিম সংগ্রহ করেছেন মৎস্যজীবীরা। হালদা গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, এবার ২৫০টি নৌকায় ৫৫০ জন সংগ্রহকারী মিলে সংগ্রহ করেছেন প্রায় ১৪ হাজার কেজির বেশি ডিম।
সংগ্রহ করা ডিম এখন হালদা নদীর দুই পাড়ে থাকা চারটি সরকারি হ্যাচারি ও শতাধিক মাটির কুয়ায় রেণু ফোটানোর কাজ চলছে। সরকারি হ্যাচারিগুলোতে ডিজিটাল এবং মাটির কুয়াগুলোতে এনালগ পদ্ধতিতে চলছে এই কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, চলতি বছর আবহাওয়ার সহায়তায় পোনা উৎপাদন ভালো হবে বলে আশাবাদী।

গত বছর যেখানে মাত্র ১ হাজার ৬৮০ কেজি ডিম সংগৃহীত হয়েছিল, এবার তা বেড়ে ১৪ হাজার কেজিতে পৌঁছেছে, যা ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে নতুন আশা জাগিয়েছে।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ১১.৫~১২ হাজার কেজির বেশি নয়।
প্রতি ৪০ কেজি ডিম থেকে ১ কেজি পোনা উৎপাদন সম্ভব। সে হিসাবে ১১.৫ হাজার কেজি ডিম থেকে ২৮১ কেজি পোনা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি কেজি পোনার বাজারদর গত বছর ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবার পোনার সরবরাহ বেশি হলেও মূল্য এক লাখ টাকার ওপরে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।আসন্ন কোরবানের ব্যস্থতা পোণা ক্রয়-বিক্রয়ে প্রভাব পড়তে পারে।
সব কিছু অনুকূলে থাকলে আগামী মঙ্গলবার থেকে পোনা বিক্রি শুরু হবে, গত বছরের চেয়ে বেশি  টাকার পোনা বিক্রির আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
বৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে অনেক মাটির কুয়া ডুবে গেছে। ফলে অনেকেই উঁচু জায়গায় ত্রিপল দিয়ে তৈরি অস্থায়ী প্ল্যাটফর্মে ডিম ফুটাচ্ছেন। একজন মৎস্যজীবী বলেন, ‘‘চারটি কুয়া তৈরি করলেও জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় এখন ত্রিপলের উপর ডিম ফুটাচ্ছি।’’
হাটহাজারীর মৎস্যজীবী কামাল সওদাগর জানান, এবার তিনি ১০টি নৌকায় ৩৫ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন এবং নিজস্ব মিনি হ্যাচারিতে রেণু উৎপাদনের চেষ্টা করছে।
হাটহাজারীর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তার উপজেলায় এবার ৮ হাজার ৩৪০ বালতি ডিম সংগ্রহ হয়েছে। ১৬টি হ্যাচারি ও ৬০টি মাটির কুয়ায় ডিম ফুটানোর কাজ চলছে।

মন্তব্য করুন