
প্রকাশিত: ১৯ মে, ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সাদা পোশাকে এক যুবকের বাড়িতে ঘুষের টাকা নিতে গিয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল । পরে তাঁকে আটক করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করা হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কনস্টেবলকে ছাড়িয়ে আনেন। সেই সঙ্গে ওই যুবকের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ঘুষ লেনদেনের ভিডিও মুছে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরশহরের শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে সোহেল রানার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানতে চাইলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের থানার ওই কনস্টেবলের ঘটনায় আমি এসপি (পুলিশ সুপার) স্যারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগী সোহেল রানা বলেন, আমি দু’মাস আগে মাদক সেবন ছেড়ে দিয়েছি। জমিজমা নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সপ্তাহ খানিক আগে একজন এসআইয়ের (সহকারী উপ-পরিদর্শক) সঙ্গে কনস্টেবল আশিক হোসেন আমাদের গ্রামে এসেছিলেন। তখন কনস্টেবল আশিক আমার কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে কোনো টাকা দেইনি। এতে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান।
সোহেল রানা আরও বলেন, এ ঘটনার দু’দিন পর রাতের বেলায় আমাকে সড়কে একা পেয়ে কনস্টেবল তাঁর পকেটে ১০ পিস ইয়াবা ঢুকে দিয়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমি পরদিন সকালে তাঁকে টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করে ছাড়া পেয়েছি। এরপর কনস্টেবল আমার বাড়ি এসে আমাকে না পেয়ে দরজায় লাথি মেরে ও গালিগালাজ করে চলে যান।
সোহেল বলেন, গতকাল শনিবার সকালে কনস্টেবল আশিক আবারও আমার বাড়িতে এসে ঘুষের টাকা দাবি করেন। তখন তাঁর হাতে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। আমার স্ত্রী আড়াল থেকে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও করেন। এরপর ঘটনাটি থানার ওসিকে জানাতে চাইলে ঘুষের টাকা রেখে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে। তখন তাঁকে বাড়িতে আটকে রেখে ৯৯৯ কল করি। থানা-পুলিশ এসে ঘটনা শুনে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও মুছে ফেলে কনস্টেবলকে আমার বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে। এ সময় গ্রামবাসী ও স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে কনস্টেবল আশিক হোসেন বলেন, সোহেল রানা একজন মাদক কারবারি। তাঁকে চিহ্নিত করতে খুব সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। এ কারণে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।
জানতে চাইলে ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস হোসেন বলেন, সোহেল রানার বাড়িতে সিভিল পোশাকে একজন কনস্টেবল আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে।
ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়ে ফেরদৌস হোসেন আরও বলেন, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে সোহেল রানার সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কাড়াকাড়ি করছিলেন। কার ফোন সেটা জানি না।
মন্তব্য করুন