‘সপ্তম দীর্ঘ’ দাবানলে জ্বলছে ক্যালিফোর্নিয়া

২০১৮ সালের ঘটনা। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে প্যারাডাইস নগর পুরোপুরি পুড়ে গিয়েছিল। আর সেই ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৮৫ জন। এবার উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে। আগুন এত দ্রুত ছড়াচ্ছে যে এরই মধ্যে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমের অঙ্গরাজ্যটির সবচেয়ে বড় দাবানলগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এবারের দাবানলটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘পার্ক ফায়ার’। প্যারাডাইস থেকে চিকোর দূরত্ব মাত্র ১৫ মাইল।

চিকো নগরের কাছের বাট কাউন্টি থেকে গত বুধবার পার্ক ফায়ারের সূত্রপাত হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই দাবানল পাশের টেহামা কাউন্টিসহ বড় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আগুনে ১৩৪টি অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত হাতে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী পার্ক ফায়ারে এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ একর ভূমি পুড়ে গেছে। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশনের (ক্যাল ফায়ার) পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলা এমনটাই হয়েছে। পোস্টে বলা হয়, এটি ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসের সপ্তম বড় দাবানলে পরিণত হয়েছে। চিকো নগরের কাছে মূলত একটি বড় গ্রামাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা। সেই এলাকা জুড়েই এখন জ্বলছে আগুন। দাবানল থেকে বাঁচতে এরই মধ্যে এলাকা ছেড়ে সরে যেতে বলা হয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষকে। ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টো থেকে চিকোর দূরত্ব মাত্র ১৪৫ কিলোমিটার।

ক্যাল ফায়ার থেকে বলা হয়, ‘ভয়াবহ দাবানল অগ্নিনির্বাপক বাহিনীকে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাচ্ছে।’ অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর প্রায় আড়াই হাজার সদস্য ও এক ডজনের বেশি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। জানিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের অবস্থা ‘শূন্য’। পার্ক ফায়ারের কারণে প্যারাডাইস নগরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। যা নগরের বাসিন্দাদের ছয় বছর আগের ভয়ংকর স্মৃতিকে আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের কারণে জলবায়ুতে যে পরিবর্তন ঘটছে তাতে চরম আবহাওয়াজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হানা দিচ্ছে। মানুষের কারণে জলবায়ুতে পরিবর্তন ঘটছে। আর তাতে চরম আবহাওয়াজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হানা দিচ্ছে। এমনটাই ঘটছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

শনিবার অন্য একটি পোস্টে ক্যাল ফায়ার থেকে বলা হয়, ‘খাড়া ভূমি এবং বাতাসের কারণে পার্ক ফায়ারের আগুন দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। পাহাড়ি ঢাল ও বাতাসের গতিপ্রবাহের কারণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।’ দাবানল শুরু হওয়ার পরদিন গত বৃহস্পতিবার পুলিশ ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করে। পুলিশের সন্দেহ, ওই ব্যক্তি একটি জ্বলন্ত গাড়ি ঠেলে একটি গিরিখাতে ফেলে দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই পার্ক ফায়ারের সূত্রপাত হয়েছে।